বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিহারের (Bihar) পর এবার ঝাড়খণ্ড (Jharkhand) রাজনীতিতেও শোরগোল তুঙ্গে। সদ্যই ইস্তফা দিয়েছেন হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren)। আর ইস্তফা দেওয়ার সাথে সাথেই ইডির (Enforcement Directorate) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। তারপর থেকেই জল্পনা এরপর মসনদে বসছেন কে? গতকাল অবধি শোনা যাচ্ছিল, এবার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন চম্পাই সোরেন। তবে সূত্রের খবর, এখনও অবধি রাজভবন থেকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ পাননি।
শুধু তাই নয়, শাসকদলের চার বিধায়কের ফোন-ও নাকি বন্ধ। রাজনৈতিক অস্থিরতার ভয়ে প্রায় ৩৫ জন বিধায়ককে হায়দরাবাদ বা ব্যাঙ্গালোরে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে খবর, যার জন্য দুটি চার্টার প্লেনও নাকি প্রস্তুত করা হয়েছে। ওদিকে সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ঝাড়খণ্ডের রাজনীতি ঠিক কোনদিকে মোড় নেবে তা জানতে উদগ্রীব সকলেই।
ঝাড়খণ্ডের এমন টালমাটাল পরিস্থিতির মাঝে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন বিজেপির লোকসভা সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি লেখেন, ‘রাঁচি সার্কিট হাউসে হায়দরাবাদে মাত্র ৩৫ জন বিধায়ক যাচ্ছেন। সরফরাজ আহমেদ বিধায়ক নন এবং হেমন্ত সোরেন জি জেলে। এখন সমস্ত বিধায়ক রাজভবনে যাবেন, সেখান থেকে তাদের গরু-ছাগলের মতো বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জেএমএম জাতীয় সভাপতি শিবু সোরেন জির অনুপস্থিতিতে বিধানসভা দলের নেতার এই সিদ্ধান্ত কে নেবেন? তথ্য অনুযায়ী, শিবু সোরেন জি বসন্ত সোরেন জিকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চান।’
আরও পড়ুন : জিও-এয়ারটেলের মাথায় হাত, ঝড়ের গতিতে চলবে ইন্টারনেট! বাজার কাঁপাতে 5G আনছে VI
উল্লেখ্য, বছর ৪৪ এর বসন্ত সোরেন হেমন্ত সোরেনের ভাই। যদিও হেমন্ত ঘনিষ্ঠ চম্পাই সোরেনের দাবি, ৮১ সদস্যের বিধানসভায় তার ৪৭ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। জেএমএম-ও নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চম্পাই সোরেনের নাম প্রস্তাব করেছে। চম্পাই সোরেনের কথায়, এবার রাজভবনের ঘুম থেকে জেগে ওঠা উচিত। তিনি বলেন, ’আমরা ১৫-১৬ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি যেখানে অন্যান্য রাজ্যে আমন্ত্রণ জানানোর দুই ঘণ্টার মধ্যে শপথ নেওয়া হয় এবং সরকার গঠনের দাবি করা হয়।’
আরও পড়ুন : ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ আগাতেই স্লট হারাল ‘কার কাছে কই’! TRP-র হিসেব বদলে দিল স্টার জলসা, নয়া টপার কে?
জেএমএম নেতার এই মন্তব্য থেকে এটা পরিস্কার যে তিনি বিহারের কথা বলেছেন। কারণ গত রবিবারই বিহার মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং একই দিনে তিনি BJP নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র সমর্থনে আবার মুখ্যমন্ত্রী হন। এদিকে ঝাড়খণ্ডের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি (মুখ্যমন্ত্রীবিহীন রাজ্য) একটি সাংবিধানিক সংকট…এটি অস্বাভাবিক।’ এমন পরিস্থিতিতে চলুন দেখে নেওয়া যাক ঝাড়খণ্ড বিধানসভার অবস্থা কীরকম!
আরও পড়ুন : আবাস যোজনা থেকে ফ্রী-তে বিদ্যুৎ! বাজেটে মধ্যবিত্তের জন্য বড় ঘোষণা কেন্দ্র সরকারের
এইমুহুর্তে চম্পাই সোরেনের দাবি, তার কাছে ৪৭জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। রাজ্যপালের কাছ থেকে বাকি ৪৩ জন বিধায়কের সমর্থন দাবি করেছেন তিনি। সরফরাজ আহমেদের পদত্যাগের পরে, জেএমএমের বর্তমানে ২৯ জন সাংসদ রয়েছে। এছাড়াও তাদের সাথে কংগ্রেসের ১৭ জন, সিপিআইয়ের একজন এবং আরজেডি থেকে একজন রয়েছেন। ওদিকে বিজেপির সদস্য সংখ্যা ২৬, এজেএসইউ (অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) থেকে ৩ জন সাংসদ রয়েছেন, একজন এনসিপি এবং অন্য দুজন। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের আশঙ্কা, মুখ্যমন্ত্রী পদ বেশিদিন খালি থাকলে বেশ কিছু বিধায়ককে কেনার চেষ্টা করা হতে পারে। আর সেই কারণেই সোরেনের সমর্থনকারী বিধায়কদের আজই হায়দ্রাবাদে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।