বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চাকরির ক্ষেত্রে একটা কথা প্রচলিত আছে, ‘ওভার কোয়ালিফায়েড’। অর্থাৎ চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় মাপকাঠির তুলনায় অধিক শিক্ষাগত যোগ্যতার অধিকারী ব্যাক্তি। এবার খাস কলকাতায় প্রকাশ্যে এসেছে এমনই এক ঘটনা।
সম্প্রতি কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ডোমের প্রয়োজন পড়েছে। তাই যথারীতি নিয়মমাফিক ডোমের কাজের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। এখানে বলে রাখি একজন ডোম হিসাবে চাকরি পেতে গেলে একজন পরীক্ষার্থীকে নূন্যতম অষ্টম শ্রেণী পাশ করতে হবে। আর এন আর এস-এর এই ডোমের পরীক্ষায় আসন সংখ্যা ছিল মাত্র ছ’টি ।
কিন্তু শুনলে অবাক হবেন, মাত্র ছ’টি আসনের এই ডোমের চাকরি পাওয়ার পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন প্রায় আট হাজার চাকুরিপ্রার্থী। সেই আবেদনপত্র উল্টে পাল্টে দেখতেই চোখ কপালে ওঠে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের। কারণ যে পরীক্ষার ন্যূনতম যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ, সেই পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছেন স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা প্রার্থীরা।
এই পরিস্থিতিতে সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর হাসপাতালের মর্গে ডোমের চাকরির জন্য যাঁরা আবেদন জানিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কম করে ২০০০ জন স্নাতক, ৫০০ জন স্নাতকোত্তর এবং ১০০ জন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করা প্রার্থী রয়েছেন।
এমনিতে যে কোনো পেশার কাজকেই সম্মান করা উচিত।পরিশ্রম করে সৎ পথে করা যে কোনো উপার্জনই সম্মানের। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, সরকারি, বেসরকারি এত ধরনের চাকরি থাকতে এমন উচ্চ শিক্ষিত হয়ে তাঁরা কেন এই ডোমের চাকরিই করতে চাইছেন। এর পিছনে থাকা যে বিষয়টা বারবার উঠে আসছে তা যে রাজ্যের বেকারত্ব,এবং চরম অর্থ সংকটের মতো বিষয় গুলিকে ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন তা বলাই বাহুল্য। তবে বিপুল সংখ্যক আবেদন কারীদের মধ্যে থেকে মাত্র ৬ জন উপযুক্ত ডোম কীভাবে নির্বাচিত করবেন তা নিয়ে এই মুহূর্তে মহা চিন্তায় পড়েছেন হাসপাতালের প্রিন্সিপাল।
জানা গেছে, আবেদনকারীদের মধ্যে ৭৮৪ জনকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে। ইন্টারভিউয়ের জন্য যাঁদের ডাকা হচ্ছে, তাঁদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তবেই মিলবে চাকরির সুযোগ। উল্লেখ্য নির্বাচিত এই প্রার্থীদের মধ্যে ৮৪ জন মহিলা রয়েছেন।