যৌবনকালে আমার সামনেই বাবা-মা চুমু খেত, একে অপরকে আদর করত: কবীর সুমন

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বছরের শুরু হয়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউকে সঙ্গে নিয়ে। বাংলা সহ গোটা দেশে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ‍্যা ভয় ধরাচ্ছে মনে। এক বছর আগের ভয়াবহ স্মৃতি ভিড় করে আসছে। আবারো দেখতে হবে না তো মৃত‍্যু মিছিল, অক্সিজেনের জন‍্য হাহাকার? উৎসবের মরশুমেও করোনার জন‍্য গৃহবন্দি মানুষ। এমনি একদিনে স্মৃতি হাতড়ে মায়ের কথা লিখেছেন কবীর সুমন (kabir suman)।

তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী কবীর সুমন। সারা জীবন সঙ্গীত সাধনা ও রাজনীতি ব‍্যালেন্স করে চলেছেন। এই বয়সে এসেও তিনি যেমন রাজনৈতিক ভাবে সচেতন, তেমনি গানপাগল। তাঁর লেখা থেকে জানা গেল, মা উমা চট্টোপাধ‍্যায়ও ও ছিলেন সঙ্গীত প্রেমী। ছেলে মায়ের মতোই হয়েছেন। তবে শুধুই সঙ্গীতানুরাগীই নন, অনেক প্রতিভা ছিল তাঁর মায়ের।


ফেসবুকে মায়ের সঙ্গে একটি পুরনো ছবি শেয়ার করে কবীর সুমন জানিয়েছেন এটি আমেরিকায় তোলা। ১৯৮০ সালে ভি ও এর চাকরি নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। মায়ের সঙ্গে তোলা খুব কম ছবির মধ‍্যে এটি একটি। এরপরেই মায়ের স্মৃতিতে ডুব দিয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী।

তিনি লিখেছেন, ‘ অসামান্য এক মহিলা ছিলেন আমার মা। সারাজীবন স্বাধীনচেতা। বেপরোয়া। কারুর তোয়াক্কা করেননি। জন্মস্বাধীন। অক্লান্ত পাঠক। বই আর বই। আমার সাত আট বছর বয়স থেকে ইণ্ডিয়ান এয়ারলাইন্সে চাকরি করতেন। আমাকেও নিত্যজীবনে স্বাবলম্বনের পাঠ দিয়েছিলেন। “মা মা” করিনি কখনও। মার্ক্সিস্ট ছিলেন। সি পি আই এমের সমর্থক। তারপর নকশালপন্থী। ওদিকে জ্যোতি বসুর কাণ্ডজ্ঞানভিত্তিক সোজাসাপ্টা কথাবার্তার ভক্ত।’

মায়ের কাছ থেকেই সঙ্গীতের প্রতি ভালবাসা এসেছে কবীর সুমনেরও। তিনি নিজে ভাল গান করতেন, অভিনয়ও করতেন। ‘রক্তকরবী’ নাটক করেছিলেন দেবব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে। কবীর সুমন জানান, সম্ভবত দুজনের মধ‍্যে ভাললাগাও ছিল। সম্পর্ক নিয়ে কখনো ছুঁতমার্গ দেখেননি তিনি বাবা মায়ের মধ‍্যে।

FB IMG 1641452487406
ছবি- ফেসবুক

সঙ্গীতশিল্পী লেখেন, ‘মা স্বাভাবিকভাবে, খোলাখুলি তাঁর পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে ডেট করতেন সেই ব্রিটিশ আমল থেকে আমার যৌবনকাল পেরিয়ে। আমার বাবার তাতে কোনও অসুবিধে দেখিনি। ছেলেবেলা থেকে যৌবনকাল অবধি মা বাবাকে দস্তুরমতো চুমু খেতে দেখেছি, লুকিয়ে নয়, আমার সামনেই তাঁরা আদর করতেন।’

কবীর সুমনের নাম পালটানোর বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবেই সে সময়ে অনেকেই ভাল ভাবে নেননি। কিন্তু পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর মা। আসলে তিনি নিজেও এক সময় এক মুসলিম যুবকের প্রেমে পড়ে ধর্ম পর্যন্ত বদলাতে রাজি ছিলেন। যদিও পরে সে বিয়ে হয়নি। সুমন বিশ্বাস করেন, তাঁর মা এখনো মাঝে মাঝেই আসেন। গান শুনতে চান তাঁর কাছে। তিনি নিজেও তাই গান নিয়েই কাটিয়ে দিলেন সারা জীবন।


Niranjana Nag

সম্পর্কিত খবর