বাংলা হান্ট ডেস্ক : বাম শাসিত কেরলের (Kerala) মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের (Pinarayi Vijayan) বিরুদ্ধে গতবছরেই সোনা পাচারের মারাত্মক অভিযোগ উঠেছিল। এবার তাঁর কন্যা টি বীণার বিরুদ্ধে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে কোনও কাজ ছাড়াই ১.৭২ কোটি টাকা নেওয়ার অভিযোগ ঘিরে কেরল রাজনীতি সরগরম। রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেস (Congress) এই অভিযোগের বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলে সরব হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, ইনকাম ট্যাক্স ইন্টেরিম সেটলমেন্ট বোর্ডের দিল্লি বেঞ্চ জানিয়েছে, একজন প্রভাবশালীর সঙ্গে সম্পর্কের প্রতিদান হিসাবে ওই বিপুল অর্থ দেওয়া হয়েছে বিজয়ন-কন্যাকে। এই অভিযোগ সামনে আসতে স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে পড়েছে কেরল সিপিএম (CPM)।
সূত্রের খবর, টি বীণা নাকি গত তিনবছর ধরে মাসিক কিস্তিতে মোট ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা পেয়েছেন কোচিন মিনারেলস অ্যান্ড রুটাইল লিমিটেড (CMRL) নামে একটি সংস্থার কাছ থেকে। ওই সংস্থাকে মার্কেটিং, তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়ার পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন বীণা ও তাঁর সংস্থা এক্স্যালজিক সলিউশন কোচিন মিনারেলস অ্যান্ড রুটাইল লিমিটেড। কিন্তু আয়কর দপ্তর জানিয়েছে, বিপুল টাকার বিনিময়ে কোনও পরিষেবাই দেননি বীণা বা তাঁর সংস্থা। বীণার সংস্থাকে টাকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিএমআরএল-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর।
আয়কর দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭-২০২০ সাল পর্যন্ত মাসিক কিস্তিতে মোট ১ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা পেয়েছেন বীণা ও তাঁর সংস্থা, যেটি বেআইনি বলে দাবি করছেন আয়কর আধিকারিকরা। তিন বিচারপতির একটি সেটলমেন্ট বোর্ড জানিয়েছে, এই টাকার বদলে যে কোনও পরিষেবাই দেওয়া হয়নি, সে বিষয়টি যথেষ্ট প্রমাণ সমেত সাব্যস্ত করতে পেরেছে আয়কর দফতর। ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো এই টাকা যে ‘অবৈধ’, সে বিষয়ে আয়করের যুক্তিও মেনে নিয়েছেন বিচারপতিরা। কীভাবে সামনে এল এই ঘটনা?
২০১৯ সালে সিএমআরএল-এর অফিসে হানা দিয়েছিল আয়কর দপ্তর। সেইসঙ্গে সেখানকার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বাড়িতেও হানা দিয়েছিলেন তাঁরা। তাতেই দেখা যায়, সংস্থার খরচ বাড়িয়ে দেখিয়ে বিপুল টাকা করফাঁকি দেওয়া হয়েছে। এরপরেই বিষয়টি মীমাংসার জন্য সংস্থাটির তরফে আবেদন জানানো হয়। সিএমআরএল-এর ফিনান্সিয়াল অফিসারের বাড়িতে হানা দেওয়ার পর সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া নথি থেকে আয়কর আধিকারিকরা জানতে পারেন, রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রী, তাঁদের ঘনিষ্ঠ, পুলিশ, সংবাদমাধ্যম এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের কাছে বিপুল টাকা পাঠানো হয়। সেখানেই বীণার সংস্থাকে টাকা দেওয়ার কথা জানা যায়।