বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই শিরোনামে রয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন। এই আন্দোলনের ‘মুখ’ হিসেবে উঠে এসেছেন বেশ কয়েকজন। দেবাশিস হালদার, কিঞ্জল নন্দ (Kinjal Nanda), অনিকেত মাহাতোদের এখন একডাকেই চেনেন অনেকে। ন্যায়বিচারের দাবিতে তাঁদের এই লড়াইকে যেমন অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তেমনই আবার কেউ কেউ কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই আন্দোলনের মতের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। সম্প্রতি যেমন প্রতিবাদকারী এক জুনিয়র চিকিৎসককে ‘বিপ্লবী’ বলে খোঁচা দিয়েছেন পরিচালক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়।
অনিকেতের কটাক্ষের পাল্টা দিকে কিঞ্জল (Kinjal Nanda)!
সম্প্রতি অনিকেত (Aniket Chatterjee) লেখেন, ‘মগজ নিয়ে কিছু কথা। এক কোটি টাকা ডোনেশন দিয়ে প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে পড়েছেন জুনিয়র ডাক্তারদের বিপ্লবী মুখ। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক’। নিজের পোস্টে কারোর নাম না নিলেও অনেকেই ধরে নিয়েছেন এই পোস্টের মাধ্যমে আদতে কিঞ্জলকেই খোঁচা দিয়েছেন পরিচালক। এবার এই নিয়ে পাল্টা দিলেন অভিনেতা-চিকিৎসক।
একদিকে ডাক্তার, অন্যদিকে বিনোদন দুনিয়ার পরিচিত মুখ। দুই ভূমিকাতেই সাফল্য পেয়েছেন কিঞ্জল। এবার তিনিই অনিকেতের পোস্টে কমেন্ট করে ‘সত্যিটা’ তুলে ধরলেন। লেখেন, ‘ইচ্ছে হল তাই লিখছি। অনেকেই অনেক কথা বলছেন। সত্যিটা একটু বলা উচিত। যেহেতু অনিকেতবাবুকে আমি কিছুটা চিনি এবং উনি আমার সিনিয়র। সেই জায়গা থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েই লিখছি’।
আরও পড়ুনঃ মহালয়ার সকালে তিলোত্তমার বাড়িতে CBI! আচমকা কী হল? ফাঁস হতেই তোলপাড়
কিঞ্জল (Kinjal Nanda) জানান, তিনি যে বছর WBJEE দেন, তখনও পশ্চিমবঙ্গে এত মেডিক্যাল কলেজ হয়নি। মোট আসনসংখ্যা ছিল ৯০০-র কাছাকাছি। এর মধ্যে তাঁর র্যাঙ্ক এসেছিল ৮৫৯ (জেনারেল)। অভিনেতা-চিকিৎসক লেখেন, ‘জেলার কিছু সরকারি কলেজে সুযোগ পাচ্ছিলাম, কিছুটা শেষের দিকে। তবে বাবা-মা যেহেতু একা থাকেন, তাই আমি বাইরে যেতে চাইনি। আমি বরাবরই ঘরকুনো। এরপর কাউন্সেলিংয়ে আমি কেপিসি-তে পাই’।
কিঞ্জল জানান, সেই সময় কেপিসিতে গভর্নমেন্টের ৫০টা আসন ছিল। এর মধ্যেই তিনি প্রবেশ করেন। ৫.৬ বছরে আমার খরচ হয়েছিল ৫ লক্ষ টাকা। তিনি বলেন, পড়াশোনার জন্য যে টাকা খরচ হয়েছিল, সেটা তিনি বাড়ি থেকে নেননি। বরং নিজে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়েছিলেন। বাকিটা তিনি টিউশনি পড়াতেন অঙ্ক আর রসায়ন।
অভিনেতা-চিকিৎসক লেখেন, ‘বাবার শিক্ষাটা এমনই ছিল। বড় হয়েছ, নিজের খরচ নিজে চালাও। তাই হয়তো পড়াশোনা, টিউশন আর থিয়েটার নিয়েই থাকতাম। ডাক্তারি পাশ করার পর নিজে কাজ করে, সৎ পথে পয়সা রোজগার করে লোন পরিশোধ করি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসবিআই শাখায় খোঁজ নিলে জানতে পারবেন’।
এখানেই না থেমে অনিকেতকে উদ্দেশ্য করে কিঞ্জল (Kinjal Nanda) লেখেন, ‘আপনি পরিচালক, খুব সম্মানীয় ব্যক্তি, সাধারণ জীবনযাপন করেন। তাই আপনার কথায় একটি সত্যতা আশা করি। কষ্ট দিয়ে থাকলে মাফ করবেন, শ্রদ্ধা নেবেন, ভালো থাকবেন। আমার বাবা সারাজীবন একটাই জিনিস শিখিয়েছেন, মানুষ হতে’।