বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষা, খাদ্যের পর শৌচাগার দুর্নীতি (Toilet Corruption Case) শোরগোল ফেলেছিল রাজ্যে। শৌচাগার সংস্কারের নামে দুর্নীতির অভিযোগ আগেই সামনে এসেছিল। কলকাতা পুরসভা (KMC) পরিচালিত বিদ্যালয়গুলিতে শৌচাগার দুর্নীতিতে অভিযোগের তীর ছিল পুরসভার শিক্ষা বিভাগের প্রাক্তন চার আধিকারিক এবং কর্মীর দিকে। এবার এই দুর্নীতিতে চলতি মাস থেকেই শুনানি শুরু হতে চলেছে। চলতি সপ্তাহেই পুর কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করবেন বলে খবর।
জানা যাচ্ছে, মার্চ মাসের শেষে কলকাতা পুরসভার ‘ডিসিপ্লিনারি প্রসিডিংস সেলে’ শৌচাগার দুর্নীতির শুনানি হবে। তিন মাসের মধ্যে শুনানি শেষ করার পরিকল্পনা আছে বলে খবর। বিচারকের আসনে থাকবেন পুরসভারই একজন পদস্থ আধিকারিক। এই দুর্নীতি প্রসঙ্গে পুরসভার এক উচ্চপদস্থ কর্তা বলেন, ২০১৭-২০ সালের মধ্যে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation) পরিচালিত ৫০টি স্কুলে শৌচাগার দুর্নীতির কথা সামনে আসে। প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা গরমিলের প্রমাণ পাওয়া যায়। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র। খুটিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। মেয়রের নির্দেশ মতোই এগোনো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রায় ৬ বছর আগে বেশ কয়েকটি পুর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা শৌচাগার দুর্নীতির বিষয়ে পুরসভার শিক্ষা বিভাগের পদস্থ কর্তাদের জানালেও সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, জোর করে খরচের বিলে তাঁদের সই করানো হতো এবং ঠিকাদারদের টাকা বরাদ্দ করা হতো। এই প্রসঙ্গে সুর চড়ান বাম প্রভাবিত ‘কলকাতা পৌর শিক্ষক ও কর্মী সংঘে’র সাধারণ সম্পাদক অশোককুমার চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, তদানীন্তর যুগ্ম পুর কমিশনারকে (শিক্ষা) এই বিষয়ে সবকিছু জানিয়েও কাজ হয়নি। এর বিহিত চাই, মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ কালীঘাটের ব্যাঙ্কেই আছে ১ কোটি! শ্রীরামপুরের TMC প্রার্থী কল্যাণের সম্পত্তির পরিমাণ জানলে ঢোক গিলবেন
অভিযোগের শেষ অবশ্য এখানেই নয়! শিক্ষা বিভাগের তৎকালীন মেয়র পারিষদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের এলাকা, বেহালার ঠিকাদারদের টাকা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে অভিজিৎবাবু প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। অন্যদিকে শৌচাগার দুর্নীতির খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন কলকাতা পুরসভার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দেন তিনি।
সেই অনুযায়ী পুরসভার শিক্ষা বিভাগের তরফ থেকে বিভাগীয় প্রাক্তন চিফ ম্যানেজার, একজন পুর আধিকারিক, তদানীন্তন ম্যানেজার এবং একজন কর্মীকে শো-কজ করা হয়। তবে তাঁরা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। যে কারণে পুরসভার তরফ থেকে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। চলতি মাসের শেষেই শুনানি শুরু হবে, পুরসভা সূত্রে এমনটাই খবর। জানা যাচ্ছে, পুর বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শুনানিতে সাক্ষী হিসেবে ডাকা হবে। এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার একজন শীর্ষ আধিকাধিক বলেন, শুনানির সময় অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। অন্যথায় পুর কর্তৃপক্ষ তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।