বাংলা হান্ট ডেস্ক: আবারও একবার চাঁদকে (Moon) স্পর্শ করতে চলেছে ভারত (India)। শুক্রবার দুপুরেই চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর চন্দ্রযান-৩ (ISRO Chandrayaan 3)। ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে তার কাউন্টডাউন। এই নিয়ে তৃতীয়বার চাঁদের মাটিতে সফট ল্যান্ডিং-র প্রচেষ্টায় ISRO। এর আগে ২০১৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ল্যান্ডার ‘বিক্রম’-কে চাঁদের পিঠে নামাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল ইসরো-র চন্দ্রযান-২।
মাত্র ২.১ কিলোমিটার দূরে পৌঁছানো মাত্রই সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর ২০১৯ সালে ৬ সেপ্টেম্বর অবতরন করার চেষ্টা করলে চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডারটি চাঁদের পৃষ্ঠে ভেঙে পড়ে যায়। এই ঘটনার ঠিক ৩ বছর ১১ মাস ও ২৩ দিন পর আবারও একবার নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে চন্দ্রাভিযান। বিক্রম ল্যান্ডার এবং প্রজ্ঞান রোভারকে পাঠানো হবে চন্দ্রপৃষ্ঠে।
এমতাবস্থায় প্রশ্ন আসতে পারে, এই মিশন থেকে ঠিক কী চান বিজ্ঞানীরা? কেনই বা বারংবার চাঁদে অভিযান চালাচ্ছেন তারা? উল্লেখ্য, এই যানটি তার সাথে অনেকগুলি পেলোড নিয়ে যাবে। মিশন সফল হলে বিজ্ঞানীরা চাঁদকে আরো ভালোভাবে বুঝতে পারবে। মূলত ৩ টি লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছেন ইসরো বিজ্ঞানীরা।
প্রথমত, বিজ্ঞানীর চন্দ্রপৃষ্ঠে একটি সফট ল্যান্ডিং করতে চান। সেখান থেকে রোভার চালাতে চান ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চাঁদের মাটি, জলবায়ু, আবহাওয়া থেকে শুরু করে চাঁদের রাসায়নিক, খনিজ, ভূতত্ত্ব সম্পর্কে তথ্য অন্বেষণ করতে চান বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও মহাকাশযানের সাথে থাকবে একটি বিশেষ যন্ত্র, যা চাঁদ থেকে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করবে।
জানা যাচ্ছে, সৌরজগতের বাইরের গ্রহ এবং তাদের মধ্যে কোনও প্রাণ আছে কী না তা খুঁজে বের করতে বিশেষ সাহায্য করবে ইসরোর এই অভিযান। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিক্রম ল্যান্ডারে চারটি পেলোড থাকবে। পৃথিবীতে ভূমিকম্পের মতো চাঁদেও কম্পন আছে। একটি যন্ত্র এই বিষয়টির উপর রিসার্চ করবে। দ্বিতীয় যন্ত্রটি পৃথিবী এবং চাঁদের মধ্যে সঠিক দূরত্ব শনাক্ত করবে। তৃতীয় যন্ত্রটি প্লাজমা পরিবেশ অধ্যয়ন করবে। চতুর্থ যন্ত্রটি খুঁজে বের করবে কিভাবে চন্দ্র পৃষ্ঠের মধ্য দিয়ে তাপ প্রবাহিত হতে দেয়।
এছাড়াও প্রজ্ঞান রোভারে লাগানো এক্স-রে এবং লেজার চন্দ্রপৃষ্ঠের গঠন বোঝার জন্য ব্যবহার করা হবে। উল্লেখ্য, সফট ল্যান্ডিং-র জন্য চাঁদের দক্ষিণ মেরুকে বেছে নিয়েছে ইসরো। ল্যান্ডারটি যদি দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে তবে পুরো বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানোর ইতিহাস গড়ে ফেলবে ভারত। আশা করা হচ্ছে এখানে জলের সন্ধানও মিলতে পারে।