৯০% কমল আয়, অথৈ জলে পরিবার! ChatGPT-র ধাক্কায় মাথায় হাত কলকাতার কন্যার

বাংলা হান্ট ডেস্ক : প্রযুক্তির কাছে মানুষ যেন অসহায়‌। যন্ত্রের ‘বুদ্ধির’ কাছে যেন দাম পাচ্ছে না মানুষের মাথা। আর এর অদূর ভবিষ্যৎ কী হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছেন কলকাতার মেয়ে শরণ্যা ভট্টাচার্য (Sharanya Bhattacharya)। যে মেয়ে একটা সময় মাসের শেষে ২০,০০০ টাকার মতো উপার্জন করতেন, তার রোজগার এখন ২,০০০ এ ঠেকেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (Artificial Intelligence) কাছে হেরে যাচ্ছে তার ট্যালেন্ট।

উল্লেখ্য, বছর ২২- এর শরণ্যা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউ অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের (আইসার) স্নাতকোত্তর পড়ুয়া। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি এজেন্সিতে কপিরাইটার হিসেবে কাজ করতেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের টুকটাক খরচ চালিয়ে নেওয়ার জন্য এই কাজটির উপরই এতদিন ভরসা করেছিলেন তিনি।

   

তবে চ্যাটজিপিটির যুগে তার সেই কাজ এখন সমস্যার মুখে। জানা গেছে, পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার মধ্যেই সেই কাজ করে সংসার টানছিলেন শরণ্যা। তবে চ্যাটজিপিটি (ChatGPT) এসে তছনছ করে দিয়েছে তার ছোট্ট দুনিয়া। শরণ্যার দাবি, গত বছরের শেষের দিক থেকে ক্রমাগত তার কাজ কমতে থাকে। আর এখন সেটা তলানিতে ঠেকেছে।

এখন মাসে খুব বেশি হলে দুটো কী তিনটে লেখা পান তিনি। শরণ্যা আরও জানিয়েছেন, তিনি যে সংস্থার হয়ে কাজ করতেন তারা হিউম্যান রিসোর্সের জায়গায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে শুরু করেছে। আর তাতেই কাজ হারিয়েছেন একাধিক মানুষ। যার মধ্যে শরণ্যাও একজন। যদিও বিষয়টি গোটাটাই শরণ্যার অনুমান। সংস্থার তরফ থেকে তো কোন কারণই নাকি দর্শানো হয়নি।

এই বিষয়ে শরণ্যার সাথে কথা হলে জানা যায়, কী কারণে কাজ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যা কোম্পানিটি দেয়নি। তবে তরুণীর দাবি, চ্যাটজিপিটি বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণেই তার কাজ কমে গিয়েছে। তারপর থেকে প্রবল সমস্যায় পড়েছেন। সংকটে পড়েছে তার গোটা পরিবার। কারণ, শরণ্যার এই উপার্জনের মুখাপেক্ষী হয়ে রয়েছে তার পরিবারের আরও মানুষজন। মায়ের শাড়ি বিক্রির টাকা এবং শরণ্যার টাকা মিলিয়েই চলত সংসার।

sharanya bhattacharya 054611 16x9

এই প্রসঙ্গে শরণ্যা জানিয়েছেন, শুধু তিনি একাই নন, বিশ্বের বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। বিশ্বে প্রচুর ভালো কপিরাইটার আছেন। তারাও আজ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তার আর্জি, ভবিষ্যতে যাতে এমন কিছু করা হয়, যাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মানুষ এগিয়ে যেতে পারেন। নয়ত মনুষ্য সমাজ শেষ হতে বেশি সময় লাগবেনা। এমনটাই আক্ষেপ প্রকাশ শরণ্যার।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর