বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে কঙ্কালসার দশা রাজ্যের। আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে শয়ে শয়ে ভুয়ো শিক্ষকদের। চাকরি বাতিলের ফলে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে স্কুলগুলি। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষকের (Teacher) বদলে কচিকাঁচাদের পড়াবেন ‘যোগ্য’ সিভিক ভলান্টিয়াররা (Civic Vounteer)। সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলা পুলিশের ‘অঙ্কুর’ প্রকল্পে সিভিক ভলান্টিয়ারদের শিক্ষকের ভূমিকায় রাখার পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
রাজ্য জুড়ে এই নিয়ে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বিরোধীদের লাগাতার কটাক্ষের মুখে পড়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলা উচিত বলে জানিয়েছেন। ফলে যথেষ্টই জলঘোলা হচ্ছে গোটা পরিকল্পনাকে নিয়ে। এবার এই বিভ্রান্তি দূর করতে ময়দানে নামলেন তৃণমূলের (TMC) মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। ‘অঙ্কুর’ প্রকল্প নিয়ে সাফ ব্যাখ্যা দিলেন নেতা।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, “এটা না জেনে অপব্যাখ্যা হচ্ছে। বিকৃত প্রচার চলছে। পুলিশের কমিউনিটি সার্ভিসের একটা অংশ হল এই অঙ্কুর প্রকল্প। সিভিক ভলান্টিয়াররা তো স্কুলে ক্লাস নিতে যাচ্ছেন না। তারা ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস করছেন। কোথাও তারা বয়স্কদের সাহায্য করবেন, কোথাও প্রান্তিক এলাকার ছেলেমেয়েদের স্কুলের বাইরে পড়াবেন, এটাই নিয়ম।”
তার সংযোজন, “এর সঙ্গে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কোনও সম্পর্ক নেই। খোঁজ নিয়ে দেখুন, সিভিক ভলান্টিয়াররা আগেও এমন অনেক ভাল কাজ করেছেন। কাজেই সবটা না জেনে সমালোচনা করার মানে নেই। এটা অযথা বিতর্ক তৈরি করা ছাড়া কিছুই নয়।” অর্থাৎ, কুণাল সাফ বুঝিয়ে দিলেন, কোনও সিভিক ভলান্টিয়ারকে শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয় নি। এটা পুলিশের কমিউনিটি প্রোগ্রাম। যা তাদের কাজের মধ্যেই পড়ে।
প্রসঙ্গত, বুধবার বাঁকুড়া পুলিশ তরফে এই ‘অঙ্কুর’ প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়। বলা হয়েছিল, জেলার জঙ্গলমহলের ৫টি থানার প্রতিটি অঞ্চলে একটি করে, পাশাপাশি বাকি অন্যান্য থানাগুলিতেও একটি করে শিক্ষাকেন্দ্র চালু হবে। এই কর্মসূচীর আওতায় মোট ১২৪ টি শিক্ষাকেন্দ্র শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়। শিক্ষাকেন্দ্রে প্রাথমিক স্তরের পড়ুয়াদের নিয়মিত অঙ্ক ও ইংরেজি শেখাবেন সংশ্লিষ্ট এলাকার সিভিক ভলান্টিয়াররা, এমনটাই ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে বাঁকুড়া পুলিশের নেওয়া এই সিদ্ধান্তে গোটা রাজ্যে শোরগোল পড়ে যায়। নানা প্রশ্নের মুখে চাপে পড়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, আপাতত প্রকল্পটি স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আগে এই নিয়ে কথা বলা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য নিয়ে ফের সমালোচনা শুরু হয়। অবশেষে এই নিয়ে বিতর্কের জট কাটাতে আসরে নামলেন কুণাল ঘোষ।