বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘদিন ধরে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। জেলের চার দেওয়ালের মধ্যেই জীবন কাটছে তাঁর। শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানির কারণে নগর দায়রা আদালতে নিয়ে আসা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) এই বহিষ্কৃত নেতাকে। সেখানেই কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) সম্বন্ধে এক বিস্ফোরক দাবি করেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের আবহে সংবাদের শিরোনামে রয়েছে কুণাল-তৃণমূল ‘সংঘাত’। বুধবার তৃণমূলের (Trinamool Congress) তরফ থেকে বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরানো হয়েছে কুণালকে। এরপর তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয় তাঁর নাম। আজ সকালে আবার তাঁর শূন্যপদে আইপ্যাকের এক শীর্ষকর্তাকে বসানোর ‘আর্জি’ জানিয়ে কার্যত তৃণমূলকে বিঁধেছেন তিনি। এই আবহে কুণালকে আক্রমণ করলেন পার্থ।
কুণাল ঘোষকে তৃণমূলের দলীয় পদ থেকে সরানো প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে পার্থ বলেন, ‘আমি যখন বাইরে ছিলাম, সেই সময় বলেছিলাম, বিরোধী দলগুলোর চেয়ে কুণাল ঘোষ আমাদের দলের মধ্যে থেকে দলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে’।
আরও পড়ুনঃ চাকরি বাতিল করেছে হাই কোর্ট! এবার বিরাট ঘোষণা মোদীর, আশার আলো দেখছেন চাকরিহারারা
এদিকে তৃণমূলের অন্দরে কুণাল-পার্থের সম্পর্কের সমীকরণ ঠিক কেমন ছিল তা অনেকেই জানেন। সারদা মামলায় জেলবন্দি থাকাকালীন একাধিকবার ‘ষড়যন্ত্রে’র অভিযোগ এনেছিলেন কুণাল। সেই সময় পার্থকেও কাঠগড়ায় তুলেছিলেন তিনি। অন্যদিকে পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর কুণাল বলেন, ‘আমি প্রথম দিন থেকে ষড়যন্ত্র বলেছি। আমার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে পার্থও ছিলেন। আমার জেলজীবনে যা হয়েছিল, আমি যখন চক্রান্তের কথা বলেছিলাম, তখন এই পার্থ এবং আরও কয়েকজন বলেছিলেন আমি নাকি পাগল। পার্থ আমাকে দলবিরোধী তকমাও দিয়েছিলেন। অথচ সেই পার্থই তখন থেকে অপা, অমুক-তমুক করে বেরিয়েছিলেন’।
সম্প্রতি ‘এবিপি আনন্দে’র কাছে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ও পার্থকে নিশানা করেন কুণাল। দাবি করেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় কিংবা তাঁর নাম করে কেউ কেউ টাকা তুলছেন সেই খবর দলের কাছে অনেক আগে থেকেই ছিল’। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই তৃণমূল এই বিষয়ে জানতো। এই কারণে পার্থকে শিক্ষা দফতরের মন্ত্রীর আসনে বসানো হয়নি বলে দাবি করেন কুণাল।
অন্যদিকে আজ কুণালের পাশাপাশি ২০১৬ এসএসসি প্যানেল বাতিল প্রসঙ্গেও প্রশ্ন করা হয় পার্থকে। এসএসসি মামলায় ২৫,৭৫৩ চাকরি বাতিলের দায় কার? এই প্রশ্নের অবশ্য কোনও উত্তর দেননি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। কুণালকে দলীয় পদ থেকে সরানো সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে ঝাঁঝালো জবাব দিলেও, এই প্রশ্নের উত্তরে মুখে কুলুপ এঁটে রাখেন পার্থ।