বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের (Trinamool Congress) বিশেষ বৈঠক রয়েছে। উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অভিষেকেরও (Abhishek Banerjee) সেখানে থাকার কথা। আর এই গুরুত্বপূর্ণ দিনের সকালেই নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। যা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এখনও মনে জ্বলছে ১০ বছর আগের আগুন
আজ থেকে ঠিক দশ বছর আগে আজকের দিনেই সারদা মামলায় (Sarada Scam Case) কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার রাজ্য সরকারের পুলিশ। তিনি তখন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ। মমতার দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আর সেই নেতার হঠাৎ গ্রেফতারিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল বাংলায়। গ্রেফতারের আগে কান্না মুছতে মুছতে সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন ঘোষবাবু।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের পোয়া বারো! ফের নতুন ছুটি ঘোষণা করল নবান্ন! কবে? দেখুন বিজ্ঞপ্তি
‘ফাইটার’ কুণাল
গ্রেফতারির পর কুণালের সাড়ে তিন বছরের জেল, জেল হেফাজতে নেতার আত্মহত্যার চেষ্টা, প্রিজন ভ্যান থেকে এক গাল দাঁড়ি মুখে চিৎকার করে কিছু বলতে চাওয়ার মুহূর্তের সেই ফটো আজও সোশ্যাল মিডিয়ায় খুঁজলে পাওয়া যায়। এরপর কেটে যায় বহু সময়। জামিন পান বর্তমান তৃণমূল মুখপাত্র। তারপর ধীরে ধীরে ফের রাজনীতিতে ফিতে আসা। একপ্রকার ‘ফাইট’ ই বলা যেতে পারে। আর এদিন সেই গ্রেফতারির ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার দিনে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লম্বা পোস্ট করলেন কুণাল।
ঠিক কী লিখলেন তিনি?
কুণালের পোস্ট
“আজ 23/11/23
ঠিক দশ বছর আগে আজকের তারিখে বিনা দোষে চক্রান্তমূলকভাবে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। অনেকে ভেবেছিল আমি ধ্বংস হয়ে যাব। ঈশ্বরের আশীর্বাদে এখনও আছি। মিথ্যা সাক্ষী, মিথ্যা মামলায় জর্জরিত থেকেও আইনে লড়ছি। জীবনযুদ্ধে লড়ছি। সাংবাদিকতা, লেখালিখি, রাজনীতিতে আছি, লড়াই করছি। রাজ্য, কেন্দ্র দুই সরকারের এজেন্সির বিরুদ্ধেই লড়াই চলছে।
কঠিনতম দিনগুলিতে যে কয়েকজন পাশে ছিল, তাদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।”
কুণাল আরও লেখেন, “আমার এবং আমার ঘনিষ্ঠদের সেদিনের চোখের জল, আর্তনাদ বৃথা যাবে না। সময় তা প্রমাণ করবে। ঈশ্বরের বিচার থেকে ষড়যন্ত্রীরা বাদ যাবে না।
আমি তৃণমূল কংগ্রেস করছি শুধু এটা প্রমাণ করতে যে মন থেকেই দলটা করে এসেছি, আমি একজন সৈনিক এবং কুণাল ঘোষ বেইমান নয়। আমি দলের এমপি, এম এল এ হব না। দলের তরফে জনপ্রতিনিধি হব না। যতদিন ইচ্ছে থাকবে সসম্মানে দলের সাংগঠনিক কাজ করব। তারপর জীবন যেভাবে বলবে, সেইভাবে চলব।
গ্রেপ্তারের দিনগুলো এবং আমার ঘাড়ে কলঙ্ক চাপানোর পর্ব ভুলিনি, ভুলব না।”
প্রসঙ্গত, দশ বছর আগে গ্রেফতার হওয়ার পর একে একে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন কুণাল। তারপর বহু সময় পেরিয়ে গেলেও ফের তৃণমূলে তার প্রত্যাবর্তনের ঘটনা এখনও মেনে নিতে পারেননা অনেকেই। এই জন্য বারংবার প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয় নেতাকে।
বাংলা হান্টের মুখোমুখি হয়ে যা বলছিলেন…
গত জুন মাসে বাংলা হান্ট আয়োজিত মেগা ইভেন্টে সাক্ষাৎকার দিতে এসেও এই ইস্যুতে প্রশ্ন করা হয়েছিল কুণাল ঘোষকে। ‘আপনাকে মমতার নাম বলতে কে চাপ দেয়?’, আমাদের সাংবাদিকের এই প্রশ্নে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘আমি এই বিষয়ে এখানে কোনও মন্তব্য করব না। আমি এদের চিনি। সিবিআই, ইডিকে আমি চিনি। এদের সঙ্গে তো ঘর করেছি। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিতেতে অনেক ভালো আধিকারিক রয়েছেন। কিন্তু তাদের সকলকেই কেন্দ্রের কথা মেনে চলতে হয়।?”
কুণালবাবু আরও বলেছিলেন, ‘দফতরে একাধিক দক্ষ ও যোগ্য আধিকারিক থাকা সত্ত্বেও তাদের দিল্লির অঙ্গুলিহেলনে কাজ করতে হয়। তবে কোনও আধিকারিক যদি অভিষেকের বিষয়ে কিছু জানতে চান, তাহলে যথা সময়ে যথা জায়গায় আমি গিয়ে বলে আসবো! আসলে রাজনৈতিক চাপে পড়ে অনেক সময়ই সিবিআই ইডি অনভিপ্রেত কাজকর্ম করে ফেলে। তখনই আমাদের সমালোচনা করতে হয়।”