নিদারুণ অর্থকষ্ট! পড়ার জন্য বন্ধক রাখতে হয়েছিল গয়নাও, সেই আসমাতারা আজ লোকো পাইলট

বাংলাহান্ট ডেস্ক : হুগলির দাদপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে আসমাতারা খাতুন স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। সেই লক্ষ্যে অবিচল থেকেছেন পড়াশোনায়। হাজার দারিদ্রতা দমাতে পারেনি তাকে। দরিদ্র পরিবারের এই সন্তান বর্তমানে খড়গপুর ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকোপাইলট। আজ গোটা গ্রাম গর্বিত আসমাতারার জন্য।

আসমাতারার বাবা-মা প্রথম থেকেই মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। সেই লক্ষ্যে ক্রমাগত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে গেছেন তারা। সংসারে যতই দারিদ্রতা থাক, কিছুতেই পড়াশোনা থামাননি মেয়ের। রসুলপুর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে প্রথমে ভর্তি হন আসমাতারা। সেখান থেকে মহেশ্বরপুর হাইস্কুল। ধনিয়াখালি মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি।

আরোও পড়ুন : ফের মা হচ্ছেন শুভশ্রী? ইয়ালিনী ৩ মাসে পড়তেই চমকে দেওয়া পোস্ট অভিনেত্রীর! যা বললেন…

তারপর আসমাতারা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার জন্য ভর্তি হন দুর্গাপুরে বেঙ্গল কলেজে। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন আসমাতারা। দিন-রাত এক করে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে গেছেন। বাবা জাকির হোসেন দু বিঘা জমিতে সামান্য চাষবাস করে কষ্ট করে সংসার চালান। মানুষ করেছেন তিন সন্তানকে।

আরোও পড়ুন : মিলেছে RBI’র ছাড়পত্র, আর কয়েকদিন! সংযুক্ত হচ্ছে জনপ্রিয় এই দুই ব্যাঙ্ক, কী প্রভাব পড়বে?

বড় মেয়ে আসমাতারার পড়াশোনার খরচ চালাতে গিয়ে রীতিমতো নাভিশ্বাস ওঠার যোগার ছিল পরিবারের। আসমাতারার মা নিজের গয়না বন্ধক রেখে চালিয়েছেন মেয়ের পড়াশোনা। গবাদিপশুর দুধ বিক্রি করেও জোগাড় করেছেন পড়াশোনার খরচ। আসমাতারা বলছেন, তার লক্ষ্য ছিল সরকারি চাকরি করা। সেই জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি।

তবে একটা সময় তিনি আশা ছেড়ে দেন। এরপর কলকাতায় আসেন পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য। অবশেষে রেলে মেলে চাকরি। বাবা জাকির হোসেনের কথায়, ‘ মেয়েকে মানুষ করতে অনেক ঝড়ঝাপটা সহ্য করতে হয়েছে। ছোট থেকে মেয়ে ছিল মেধাবী। প্রতিটা বাবা-মাকে বলব জীবনে ঝড়ঝাপটা যাই আসবে সেটাকে সহ্য করে মেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সাহায্য করতে হবে।’

img 20240309 124205

আসমাতারার মা নুরজাহান বেগম জানিয়েছেন, ‘মেয়েকে প্রতিষ্ঠিত করতে অনেক লড়াই করতে হয়েছে। সামান্য দুই বিঘা জমি ছিল। তার উপর ভিত্তি করেই গোটা সংসার টানা, মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগানো সব করতে হয়। বিয়ের গয়না বন্ধক রেখে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছি।’

 

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর