বিষ্ণুপুরে প্রচারে ঝড় তুললেন সৌমিত্র খাঁ! সাধারণ মানুষের জনজোয়ার, উচ্ছ্বাস দেখে আপ্লুত BJP প্রার্থী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বৈশাখ মাস মানেই কালবৈশাখী ঝড়, একথা সকলেরই জানা। তবে গোটা বছর ধরে যিনি নিজের কেন্দ্রে উন্নয়নের ঝড় তুলেছেন তিনি বিষ্ণুপুরের বিদায়ী বিজেপি সাংসদ (BJP MP) তথা এবারের গেরুয়া প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। আসন্ন লোকসভা নির্বাচন। হাতে আর দিন কয়েকের সময়। শাসক থেকে বিরোধী বর্তমানে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত সকলে। আর পাঁচজন প্রার্থীর মতো ভোটের আগ মুহূর্তে কোমর বেঁধে প্রচারে নেমে পড়েছেন বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ।

গোটা বছর নিজের কেন্দ্র থাকলেও ভোটের সময় খানিক বাড়তি জোর। সোমবার নিজ লোকসভার ইন্দাস বাজারে দলীয় কর্মীদের নিয়ে প্রচারে বেরিয়েছিলেন বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। সেই সময় নিজের ফেসবুক থেকে লাইভ করেন সৌমিত্রবাবু। আর তাতে চোখে পড়ল কেবল বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ভরা জনজোয়ার। যা দেখে আপ্লুত সাংসদ নিজে।

রাজ্যের একাধিক কেন্দ্রে যেখানে তৃণমূল প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর তাদের নিয়ে দলের অন্দরেই দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। অনেকেই বলছেন নির্বাচন এলেই এদের শুধু চোখে দেখা যায়। নয়তো ডুমুরের ফুল। ঘাটালের হেভিওয়েট তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব তো নিজের মুখেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে তাকে গত দশ বছরে নিজের কেন্দ্রে খুব কম দেখা গিয়েছে। আর এখানেই তাদের থেকে সব ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী বিজেপির সৌমিত্র খাঁ।

লোকসভা নির্বাচনে নজরকাড়া কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম হল বিষ্ণুপুর। এই আসনে তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা সৌমিত্র খাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল। তবে তাতে বিন্দুমাত্র মাথাব্যাথা নেই বিজেপি প্রার্থীর। নিজের প্রচার, কাজ, লক্ষ্য পূরণেই ব্যস্ত তিনি। এখনও পর্যন্ত হওয়া একাধিক জন সমীক্ষাও তাই বলছে, যে লোকসভা ভোটে সম্ভাব্য জয়ী সৌমিত্র খাঁ।

কারণ কী? তৃণমূল সৌমিত্রর পরাজয়ের জন্য সকল চাল চাললেও কেন সবদিক থেকে এগিয়ে সৌমিত্র? উত্তর আসবে উন্নয়ন। সম্প্রতি গত ৫ বছরে নিজের কেন্দ্রের উন্নয়নের খতিয়ান লিখিত আকারে তুলে ধরেছেন সৌমিত্র। কী নেই সেখানে, রাস্তা থেকে পানীয় জল, সোলার শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি থেকে শিক্ষা ক্ষেত্র, রেলে উন্নয়ন। এসব দিয়েই ঠাসা তার ৫ বছর।

আরও পড়ুন: রাম নবমী ‘দাঙ্গা করার দিন’! বোমা ফাটালেন মমতা, ভিডিও শেয়ার করে তুলোধনা অমিত মালব্যর!

সৌমিত্র খাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং রেল মন্ত্রকের সহযোগিতায় বিষ্ণুপুর রেলস্টেশনে ফুট ওভারব্রিজ, লিফট ও চলমান সিঁড়ির মত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা চালু রয়েছে। সম্পূর্ণ হয়েছে রাজা বিরহাম্বির নামাঙ্কিত উড়ালপুলের নির্মাণের কাজ। মশাগ্রাম রেল লাইনের হাওড়ার সাথে সরাসরি সংযোগের যে দাবি সৌমিত্র খাঁ বারংবার লোকসভায় রেখেছেন, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে তা সম্পন্ন। এলাকায় দুর্নীতি দমনেও তিনি কড়া হাতে ব্যবস্থা নিয়েছেন। লোকসভার, সভা জনসভার পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যায়ের বিরুদ্ধেও জোর গলায় আওয়াজ তুলেছেন সৌমিত্র।

mp soumitra kha

তার অক্লান্ত চেষ্টায় ২২০ কোটি টাকার অনুমোদন প্রাপ্তি ও ময়নাপুর থেকে জয়রামবাটি পর্যন্ত রেলপথের কাজ আজ প্রায় শেষের পথে। শেষের পথে আরেকটি কাজ হল শালী নদীর উপর ব্রিজ। খড়গপুর থেকে মোরগ্রাম পর্যন্ত যে অত্যাধুনিক ১১৬ এ জাতীয় রাজপথ জমি অধিগ্রহণের পর নির্মাণের পথে সেটাও সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এর প্রচেষ্টায় বিষ্ণুপুর লোকসভার কোতুলপুর ব্লক, ইন্দাস ব্লক এবং খন্ডকোষ বিধানসভার বিভিন্ন অংশের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সৌমিত্র জমানাতেই বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যমন্ডিত মন্দিরগুলি রক্ষণাবেক্ষণ এবং সৌন্দর্যের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া নিজের কেন্দ্রে সোলার পথবাতি
সোলার উচ্চ বাতি, পানীয় জল শুদ্ধিকরণ যন্ত্র, অগ্নি সতর্কীকরণ ও অনুসন্ধানকারী যন্ত্র স্থাপন, নিজের কেন্দ্রের স্কুলের বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা,
ব্যায়ামাগারে যন্ত্রপাতি, বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের প্রদত্ত যন্ত্রপাতি, শৌচালয় থেকে শুরু করে
সীমানা প্রাচীর, শবদাহ বিশ্রামাগার, খেলার মাঠের উন্নতি সহ অনুসঙ্গিক একাধিক জনকল্যাণমূলক কাজে গত পাঁচ বছরে তার সাংসদ তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। আর সবমিলিয়ে বিষ্ণুপুরের আনাচে কানাচে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে সৌমিত্রর জয়জয়গান। এবার ‘গ্রামের ছেলে’ সৌমিত্র এবার কিরূপ ফল করে, ১০০ নম্বরে জনতা তাকে কত দেয়, এসব বোঝা যাবে আগামী ৪ জুন।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর