এই গ্রামে মন্দির-মসজিদে নিষিদ্ধ লাউডস্পিকার! বিবাদ নয়, নজর দেওয়া হয় উন্নতির দিকে

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বেশ কয়েকদিন ধরেই আমাদের দেশে একাধিক ধর্মীয় উষ্কানীমূলক ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। হিজাব বিতর্কই হোক কিংবা লাউডস্পিকারের ঘটনা প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে দেশজুড়ে। এমনকি, দেশের রাজনীতির ইস্যুতেও উঠে এসেছে লাউডস্পিকারের প্রসঙ্গ।

এমতাবস্থায়, মসজিদে লাউডস্পিকারের ব্যবহার নিয়ে নিয়ে জনগণের মধ্যেও তৈরি হয়েছে মতানৈক্য। তবে, আমাদের দেশেই এমন একটি গ্রামের নাম বর্তমানে উঠে এসেছে যেখানে আজ থেকে পাঁচ বছর আগেই সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়েছে লাউডস্পিকারের ব্যবহার।

৫ বছর ধরে লাউডস্পিকার বাজছে না এই গ্রামে:
জানা গিয়েছে যে, মহারাষ্ট্রের নান্দেদ জেলার মুদখেড় তহসিলের বরদ গ্রাম পঞ্চায়েতে গত পাঁচ বছর ধরে লাউডস্পিকার বাজানো হচ্ছেনা। মন্দির হোক বা মসজিদ, এখানে কোনো গম্বুজে লাউডস্পিকার দেখতে পাবেন না কেউই। কারণ পাঁচ বছর আগে এখানে লাউডস্পিকার ব্যবহারে সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে কোনো রকম ঝগড়া বা বিবাদ ছাড়াই। জনগণের পারস্পরিক সম্মতিতে মন্দির-মসজিদ-বুদ্ধ বিহারে লাউডস্পিকার বাজানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে পাঁচ বছর আগে। তারপর থেকেই লাউডস্পিকার বাজে না এই গ্রামে।

মূল লক্ষ্য অগ্রগতি:
নান্দেদ জেলার বরদ গ্রামের এই সিদ্ধান্তকে ধর্মীয় ঐক্যের নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। অন্যতম সমৃদ্ধশালী ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ গ্রাম হিসেবে পরিচিত এই গ্রাম কলা, আখের পাশাপাশি সবজি ও ফুলের উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। চাষের ক্ষেত্রে প্রতি বছর নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি করে বরদ গ্রাম।

প্রায় ১৫ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে এই গ্রামে সমস্ত বর্ণ এবং ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করে আসছেন। ১৫ টি হিন্দু মন্দির, বৌদ্ধ বিহার, জৈন মন্দির এবং মসজিদ সহ এই গ্রামের ধর্মীয় স্থানে লাউডস্পিকার বাজানোর কারণে শব্দ দূষণ ঘটত। এরপরে, ২০১৮ সাল নাগাদ, গ্রামের সমস্ত ধর্মীয় স্থানে লাউডস্পিকার বাজানো নিষিদ্ধ করা হয়।

loudspeaker 625e969b920d1

মানুষ এই সিদ্ধান্তে খুশি:
আজ যখন লাউডস্পিকারের নামে মানুষের মধ্যে বিদ্বেষের বীজ বপন করা হচ্ছে, সেখানে এই গ্রাম সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে শক্তিশালী করেছে। বিশেষ করে এই সিদ্ধান্তে গ্রামের বাসিন্দাদের পাশাপাশি জামে মসজিদের মৌলবী মহম্মদ রাজা ও গ্রামের সরপঞ্চ বালাসাহেব দেশমুখের কারোরই কোনো সমস্যা ছিল না। বরং, তাঁরা এই সিদ্ধান্তে খুশি।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর