বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়ার (Malaysia) সুপ্রিম কোর্ট। যেটি ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত শুক্রবার মালয়েশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট কেলান্তান রাজ্যের শরিয়া ভিত্তিক ফৌজদারি আইন বাতিল করেছে। পাশাপাশি, এই বিষয়ে আদালত জানিয়েছে যে এটি ফেডারেল সরকারের অধিকার এবং এই ধরণের আইন ওই অধিকারকে সীমাবদ্ধ করে। এদিকে, এই সিদ্ধান্তের পর মালয়েশিয়ার ইসলামিক কট্টরপন্থীরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
তথ্য অনুসারে, এই মামলাটি ২০২২ সালে দু’জন মুসলিম মহিলার তরফে আদালতে দায়ের করা হয়েছিল। যেটির শুনানির সময়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪-এ ৯ সদস্যের ফেডারেল আদালত ৮-১ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে রায় দেয়। পাশাপাশি, এই সিদ্ধান্তে ১৬ টি আইন অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
ওই আইনগুলিতে যৌনতা, যৌন নির্যাতন, অনাচার এবং “ক্রস ড্রেসিং” (বিপরীত লিঙ্গের পোশাক পরা) থেকে শুরু করে মিথ্যা প্রমাণ দেওয়ার বিষয় পর্যন্ত অপরাধের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। আদালত এই আইনগুলিকে প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে যে ওই বিষয়গুলির জন্য ইসলামিক আইন করা যাবে না। কারণ এই বিষয়গুলি মালয়েশিয়ার ফেডারেল আইনের অধীনে রয়েছে।
আরও পড়ুন: সীমান্তে বাড়ছে ভারতের হুঙ্কার! চিনের নাকের ডগায় এই কাজটি করছে ভারত, আতঙ্কে বেজিং
এই রায় ঘোষণার সময় আদালতের বাইরে কঠোর নিরাপত্তা ছিল। কারণ ইসলামিক কট্টরপন্থীরা আগে থেকেই এই মামলার বিরুদ্ধে ছিলেন। স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে যে, রায় ঘোষণার সময় এক হাজারেরও বেশি কট্টরপন্থী মানুষ আদালতের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি, রায় সামনে আসার পর তারা সবাই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা বলেন, “একটি ইসলামিক দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। এটা আমাদের চোখের সামনে ঘটছে। আমরা মুসলিমরা অনুভব করি যে আমাদের চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। আমাদের দেশে আইন না থাকলে অসুবিধা হতে পারে। দেশ সমস্যায় পড়বে।”
আরও পড়ুন: মোদী ম্যাজিক! প্রধানমন্ত্রী শুধু নাম ধরতেই তুঙ্গে LIC-র শেয়ার, নজির গড়ল জীবন বিমা নিগম
এদিকে, কিছু বিক্ষোভকারী এই সিদ্ধান্তের জন্য নেতাদের দায়ী করেছেন। যদিও কেউ কেউ দাবি করেছেন যে শরিয়া আইন রাষ্ট্রে আগের মতোই কার্যকর করা উচিত। এতে কোনো পরিবর্তন হওয়া উচিত নয়। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, মালয়েশিয়া ১৯৯০ সাল থেকে কট্টরপন্থী প্যান মালয়েশিয়ান ইসলামিক পার্টি বা PAS দ্বারা শাসিত হয়েছে। সেখানে দ্বিস্তরীয় আইনি ব্যবস্থাও আছে। যেখানে আওতায় মুসলমানদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়গুলি শরীয়তের আওতায় আসে এবং দেওয়ানি আইনও সেখানে প্রযোজ্য। এদিকে, যে রাজ্যের আদালত এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে, সেই রাজ্যের জনসংখ্যার ৯৭ শতাংশই মুসলিম।