বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে বিশ্বে দ্রুত পরিবর্তন ঘটছে ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণ। এমতাবস্থায়, কখন কোন এলাকায় পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে তা আগে থেকে নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। প্রতিটি দেশই এখন নিজেকে শক্তিশালী করতে ব্যস্ত। ঠিক এই আবহেই একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে যে, ভারতের (India) সাথে বিতর্ক শুরু করে মালদ্বীপ (Maldives) ইতিমধ্যেই তার অর্থনৈতিক অঞ্চলের ওপর কড়া নজর রাখতে তুরস্কের কাছ থেকে নজরদারি ড্রোন কিনেছে। ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলারে এই চুক্তি হয়েছে।
এদিকে, Editon.Mv নিউজ পোর্টাল অনুসারে সরকার নুনু অ্যাটল মাফারুতে একটি সামরিক ড্রোন ঘাঁটি নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু করেছে। তুরস্ক থেকে কেনা ড্রোনগুলি মালদ্বীপের সমুদ্রসীমা রক্ষায় মোতায়েন করা হবে। উল্লেখ্য যে, নভেম্বরে মোহাম্মদ মইজ্জু যখন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হন, তখন তিনি তুরস্কেই প্রথম সফর করেন।
হয়েছে চুক্তি: সেই সফরে তিনি তুরস্কে তৈরি একাধিক সামরিক অস্ত্র দেখেন এবং এরপর মইজ্জু ড্রোন কেনার জন্য তুরস্কের একটি কোম্পানির সাথে চুক্তি করেন। তবে মালদ্বীপ সরকার চুক্তির বিষয়ে খুব বেশি কিছু জানায়নি। খবরে বলা হয়েছে, ওই কোম্পানি Bayraktar TB2 ড্রোনগুলি ৩ মার্চ ডেলিভারি করে। উল্লেখ্য যে, Bayraktar হল তুরস্কের প্রেসিডেন্টের জামাইয়ের কোম্পানি। চিনের সমর্থক হিসেবে বিবেচিত মইজ্জু জানুয়ারিতে চিন থেকে ফেরার পর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে সরকার নজরদারি ড্রোন কিনতে চায়।
এলাকায় রাখবে নজর: গত ৪ মার্চ, মইজ্জু ঘোষণা করেছিল যে সরকার এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন (EEZ)-এর বিস্তীর্ণ এলাকা পর্যবেক্ষণের জন্য ২৪/৭ মনিটরিং সিস্টেম স্থাপনে কাজ করছে। উল্লেখ্য, এই ড্রোনগুলি আর্মেনিয়া থেকে ইউক্রেন পর্যন্ত ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানেও তুরস্কের দেওয়া এই ঘাতক ড্রোন রয়েছে।
জানিয়ে রাখি, ভারত তার উপকূল রক্ষার জন্য মালদ্বীপকে ডোরিয়ান বিমান এবং হেলিকপ্টার দিয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিগত দল এই বিমানটি মেরামত করে। তবে মোহাম্মদ মইজ্জু এই সৈন্যদের ১৫ মার্চের মধ্যে মলদ্বীপ ছাড়তে বলেছেন। আর এই শূন্যতা পূরণে তুরস্কের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে মইজ্জু।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে টেক্কা! নতুন প্রকল্পের সূচনা প্রধানমন্ত্রীর, মহিলারা পাবেন মোটা টাকা
এদিকে, ওই নিউজ পোর্টালটি এই বছরের শুরুতে বলেছিল যে প্রেসিডেন্ট অফিস আমদানি শুল্ক অব্যাহতি পদ্ধতি সংশোধন করেছে। যেখানে রাষ্ট্রপতিকে নিরাপত্তা কর্মীদের দ্বারা ব্যবহৃত আইটেমগুলির আমদানি শুল্ক মকুব করার ক্ষমতা দেওয়া যেতে পারে। এমতাবস্থায়, সামরিক ড্রোন কেনা সহজ করতেই নিয়ম সংশোধন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানিয়ে রাখি যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানুয়ারিতে লাক্ষাদ্বীপে গিয়েছিলেন। এই বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে মলদ্বীপ সরকারের কিছু মন্ত্রী আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। এরপর ওই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। জবাবে মলদ্বীপ সরকার ওই মন্ত্রীদের বরখাস্ত করে। শুধু তাই নয়, এর ফলে ভারতে মলদ্বীপ বয়কটের ডাক ওঠে যার ফলে পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল মলদ্বীপের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এমতাবস্থায়, সম্প্রতি মলদ্বীপের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিও ভারতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।