বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে যখন ভারত-মালদ্বীপ (India-Maldives Controversy) বিতর্কের আবহে সরগরম সর্বত্র ঠিক সেই আবহেই কড়া অ্যাকশনে নামলেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। মূলত, সদ্য চিন সফরের পরেই তিনি ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এমনকি, গত শনিবার তিনি কোনো দেশের নাম না করেই কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছিলেন তাঁর সরকার কাউকে ধমকানোর ছাড়পত্র দেয়নি। যদিও ঠিক তারপরের দিনই স্পষ্টভাবে ভারতীয় সেনাকে তাঁর সরকারের তরফে দ্রুত মালদ্বীপ ছাড়তে বলা হল।
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এক্ষেত্রে রীতিমতো দু’মাসের সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে মালদ্বীপ সরকারের তরফে। এমতাবস্থায়, জানা গিয়েছে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনাকে মালদ্বীপ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সংবাদ সংস্থা PTI-এর তরফে এই খবর সামনে এসেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এর আগে মালদ্বীপের তরফে কূটনৈতিক স্তরে সেনা সরিয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের কাছে আর্জি জানানো হয়। তবে, এবার আর্জির উর্ধ্বে উঠে কার্যত দেওয়া হল “নির্দেশ”। এই প্রসঙ্গে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর সচিবালয়ের শীর্ষ আধিকারিক আবদুল্লা নাজিম ইব্রাহিম ওই দেশের একটি সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন “মালদ্বীপে ভারতীয় সেনারা থাকতে পারবেন না। কারণ, এটাই হল প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এবং তাঁর সরকারের সিদ্ধান্ত।”
এদিকে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ভারতের উদ্দেশ্যে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মুইজ্জু জানিয়েছিলেন, “সমস্ত বিদেশি সেনাকে আমরা আমাদের দেশের মাটি থেকে ফেরত পাঠাব।’’ মূলত, এই ঘোষণার মাধ্যমে মুইজ্জু নাম না করেও স্পষ্টভাবে ভারতকে নিশানা করেন। এর কারণ হল, ভারত মহাসাগরের বুকে থাকা ওই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এবং শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনা।
এমতাবস্থায়, পরবর্তীতে কূটনৈতিক স্তরে মালদ্বীপের তরফে ভারতকে বারংবার সেনা সরানোর বার্তা দেয় মালদ্বীপ। এদিকে, মালদ্বীপে মুইজ্জুর দল প্রোগ্রেসিভ পার্টি অফ মালদ্বীপস এটাও প্রচার করে যে, ওই দেশের সার্বভৌম ক্ষমতাকে খর্ব করতেই ভারত সেনা রেখে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: অবাক কাণ্ড! মহিলার ছদ্মবেশে দিতে গিয়েছিলেন পরীক্ষা, হল থেকে পাকড়াও হলেন যুবক, তারপরে যা ঘটল
পাশাপাশি, এই সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুইজ্জুর সেনা সরানো সংক্রান্ত নির্দেশের নেপথ্যে ভারতের আরেক পড়শি দেশ চিনের “হাত” রয়েছে বলেও মনে করছেন অধিকাংশজন। এমনিতেই, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মইজ্জু “চিনপন্থী” নামে পরিচিত। পাশাপাশি, গত সপ্তাহে মইজ্জু পাঁচ দিনের জন্য চিন সফরে যান। ওই সফরের তৃতীয় দিনে অর্থাৎ গত বুধবার তিনি জিনপিংয়ের বেজিংয়ে বৈঠক করেন। আর ওই বৈঠক শেষেই ভারতের সঙ্গে চলতে থাকা সাম্প্রতিক সংঘাতের আবহে চিনা প্রেসিডেন্ট জিনপিং মালদ্বীপের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।
আরও পড়ুন: আজিম প্রেমজির জন্য Wipro-তে চাকরি হয়নি নারায়ণ মূর্তির! তারপর তৈরি হয় Infosys, চমকে দেবে কাহিনী
শুধু তাই নয়, ওই বৈঠকেই মুইজ্জু বেজিংকে তাঁদের “পুরোনো বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠতম সহযোগী” হিসেবেও বিবেচিত করেন। এছাড়াও, বৈঠকে মালদ্বীপ এবং চিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলে জানা গিয়েছে।