বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পুজোর আগেই রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। জল থইথই অবস্থা বহু জায়গায়। সম্প্রতি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ডিভিসির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই সঙ্গেই তাঁর মুখে শোনা যায় সম্পর্ক ছেদের হুঁশিয়ারি।
ডিভিসি-তে (DVC) পশ্চিমবঙ্গেরও প্রতিনিধিত্ব রয়েছে
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) কথায়, রাজ্যকে অবগত না করেই অনিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছেড়েছে ডিভিসি। যে কারণে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। এই বন্যাকে ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলেও তোপ দাগেন মমতা। এক্ষেত্রে বলে রাখি, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন তথা ডিভিসি একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান। এর অন্যতম স্টেক হোল্ডার কেন্দ্র, তবে রাজ্যেরও প্রতিনিধিত্ব রয়েছে সেখানে। মূলত বাংলা এবং বিহারের বন্যা পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেই ডিভিসি তৈরি করা হয়েছিল।
- সম্পর্ক ছিন্ন করলে বাংলার লাভ নাকি ক্ষতি?
সম্প্রতি বাংলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ডিভিসির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, ‘ডিভিসির জন্যে কেন বাংলা ডুববে? আমরা কৈফিয়ত চাই। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে জল ছাড়া হয়। ডিভিসির সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখব কিনা সেটা ভেবে দেখব’।
আরও পড়ুনঃ পুজোর আগেই লক্ষ্মীলাভ! অ্যাকাউন্টে ঢুকবে বাড়তি ২৮,২০৮ টাকা! কপাল খুলবে এই সরকারি কর্মীদের
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর এই নিয়ে মুখ খোলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করুন। আটটা জেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাবে’। বিজেপি বিধায়কের দাবি, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের (Damodar Valley Corporation) সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করলে আদতে বাংলাই সমস্যায় পড়বে।
এদিকে বাঁধের মাধ্যমে যে জল ধরে রাখা হয়, সেটা চাষের কাজ, বিদ্যুৎ তৈরির কাজে লাগায় ডিভিসি (DVC)। কিন্তু বর্ষাকালে লাগাতার বৃষ্টি হয়। সেই সময় জল অনেক বেড়ে গেলে তা ছাড়তে হয়। কর্পোরেশনের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০:৫১ মিনিট নাগাদ ৫০,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই জল না ছাড়লে বাঁধের দেওয়াল ভেঙে যেতে পারে। তখন জল কোনদিকে বয়ে যাবে সেটা বলা মুশকিল।
এদিকে কেন্দ্রের তরফ থেকে বলা হয়েছে, দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গেরও প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এই কমিটি অনুমোদন করলেই জল ছাড়া সম্ভব। এই বিষয়ে প্রাক্তন নগর পরিকল্পক দীপঙ্কর সিনহার গলাতেও শোনা গিয়েছে একই সুর। দীর্ঘদিন কর্মসূত্রে এই বাঁধ সম্বন্ধিত কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। দীপঙ্করবাবুও বলেন, রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে জল ছাড়া সম্ভব নয়!