বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) মামলায় ২০২৬ সালের গোটা নিয়োগের প্যানেল বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। যার জেরে চাকরি গিয়েছে ২৫৭৫৩ জনের। ভোটের মাঝে শিক্ষা দুর্নীতিতে নজিরবিহীন এই রায় ঘিরে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে প্রথম দিন থেকেই সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রতিদিনই প্রচারে গিয়ে হাইকোর্ট বিজেপিকে এক সারিতে রেখে আক্রমণ শানাচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
গতকাল পিংলার জনসভা এসএসসির রায় নিয়ে বিরোধীদের তোপ দাগেন মমতা। ভরা সভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামেগঞ্জে মানুষ খেকো বাঘের কথা শোনা যায়। কিন্তু চাকরিখেকো বিজেপিকে দেখেছেন। একসঙ্গে এত হাজার হাজার চাকরি খেয়ে নিয়েছেন তারা। আবার চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদ সমেত টাকা ফেরত দিতে হবে।’
এরপরই কারও নাম না নিয়ে বিচারপতির দিকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘যিনি রায় দিয়েছেন তার যদি চাকরি চলে যায় আর সব টাকা ফেরত দিতে হয় তাহলে আপনি সেটা দিতে পারবেন তো! যখন ইচ্ছে হচ্ছে চাকরি খেয়ে নেবে। ‘ একই সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Abhijit Ganguly) তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘চাকরি খাওয়ার প্রথম সই করার লোক তমলুকের প্রার্থী হয়েছেন।’ যদিও মুখ্যমন্ত্রী কারও নাম মুখে নেন নি।
মমতার এই আক্রমণের পাল্টা প্রতিক্রিয়াও দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় একজন দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ। ওনাকে আমি আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলে স্বীকার করি না। প্রথমত আপনারা চাকরি বিক্রি করেছেন বহু মানুষের কাছে। তারপর কারা আসল ক্যান্ডিডেট ও কাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চাকরি দিয়েছেন সেই সংক্রান্ত উপযুক্ত তালিকা কোর্টের কাছে দেননি।
আরও পড়ুন: ‘১০ তারিখই…’, কালীঘাটের কাকুর মামলায় বিরাট নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের, তোলপাড় রাজ্য
প্রাক্তন বিচারপতি আরও বলেন, ‘তদন্তটা যদিও আমার হাতে শুরু হয়েছিল। এরপর সুপ্রিম কোর্ট অবধি যায়। এরপর হাইকোর্টে ফিরে এলে ডিভিশন বেঞ্চ সব জেনে বুঝে ১৭টি কারণ দেখিয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আপনি এই ১৭টি পয়েন্টের একটিরও উত্তর দিতে পারবেন? দিন আমরা শুনতে চাই। তিনি যদি না পারেন তবে তার বিদ্যেবুদ্ধির অভাব আছে বলেই আমি মনে করি। প্রথম চাকরি খাওয়া লোক এসব বলে আর কী হবে। আপনি ও আপনার দল তো প্রথম চাকরি চুরি করার লোক।’ প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয় বিচারপতি থাকাকালীনও মমতা ও তৃণমূলের আক্রমণের মুখে পড়েন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আর বিচারপতির আসন ছেড়ে ভোটে দাঁড়ানোর পর তা বহুগুনে বৃদ্ধি পেয়েছে।