বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ফের একবার আক্রমণাত্মক মেজাজে ধরা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এদিন কৃষ্ণনগরে (Krishnanagar) একটি সভা থেকে বিজেপিকে (Bharatiya Janata Party) আক্রমণ করার পাশাপাশি সিএএ (CAA) কার্যকর করা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
মাত্র কয়েকটা মাস, আর তারপরেই গোটা দেশ জুড়ে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে লোকসভা নির্বাচন। তার মাঝেই আসন্ন গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন জিততে মরিয়া বিজেপি আর তার আগে বিজেপি নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলাতেও শোনা গিয়েছে সিএএ আইন।
শুধু তাই নয়, এমনকি বর্তমানে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং অন্যান্য একাধিক দেশগুলি থেকে আসা অ-মুসলিম সম্প্রদায় তথা হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান এবং শিখদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে বড় ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার। এক্ষেত্রে গুজরাটের দুটি জেলায় এই সকল অ-মুসলিম মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে ঘোষণা করে বিজেপি সরকার।
পাশাপাশি দেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ইস্যুতে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ দেশের বাইরে নয়। এখানেও সব হবে।” আর এদিন কৃষ্ণনগরের সভা থেকে এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা, “বিজেপি আবার ক্যা ক্যা শুরু করে দিয়েছে। ভোট এলেই ওদের মুখে ক্যা ক্যা শোনা যায়। ভালো করে শুনুন, এখানে এসব করতে দেবো না।”
উল্লেখ্য, অতীতে বিজেপির তরফ থেকে সংসদে সিএএ আইন সংক্রান্ত একটি বিল পাশ করা হলেও পরবর্তীতে দেশবাসীর বিরোধিতার কারণে পিছু হটতে হয় তাদের। শুধু তাই নয়, গত বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে বাংলায় প্রচার করতে এসে ‘অনুপ্রবেশকারী’ প্রসঙ্গে মন্তব্য রাখতে দেখা যায় একাধিক বিজেপি নেতা মন্ত্রীদের। এদিন সেই ইস্যুকে সামনে এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজেপি এখান-ওখান থেকে কিছু মানুষকে অনুপ্রবেশ করাতে চায়। তাদেরকে নাগরিকত্ব দিয়ে আপনাদেরকে (মতুয়া) ছোট করার প্রচেষ্টা করা হয়ে চলেছে। তবে আমি কখনোই সিএএ হতে দেব না।”
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মতুয়া ভোটের দিকে এই মুহূর্তে নজর রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। সেই প্রসঙ্গে এদিন মতুয়াদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রানাঘাট লোকসভা নির্বাচনে আমরা পরাজিত হয়েছি। বিধানসভাতে মাত্র একটি ভোট পেয়েছে। কিন্তু ওদেরকে ভোট দিয়ে আপনারা কি পেয়েছেন? আপনাদের যদি মনে হয় যে, আপনারা যদি নাগরিক নন, তাহলে আমিও নই। আমি জীবন দিয়ে দেব, কিন্তু নাগরিকত্ব হতে দেব না।”
প্রসঙ্গত, অতীতে মতুয়া ভোটে এক প্রকার আধিপত্য বিস্তার করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে পরবর্তী সময়ে নাগরিকত্ব আইন এবং অন্যান্য একাধিক ইস্যুকে সামনে এনে সেই ভোটব্যাঙ্ককে নিজেদের দিকে টেনে নেয় পদ্মফুল শিবির। ফলে বিশেষজ্ঞদের মতে, এদিন সিএএ নিয়ে মমতার বক্তব্যের মাধ্যমে একদিকে যখন কেন্দ্র সরকারকে কড়া আক্রমণ শানালেন, আবার অপরদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকেও স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।