বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের একবার মিডিয়া ট্রায়ালকে লক্ষ্য করে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। একই সঙ্গে বিচারব্যবস্থার উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো এবং দেশের পরিস্থিতিকে রক্ষা করার অনুরোধ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “দেশ ক্রমাগত রাষ্ট্রপতি শাসনের দিকে অগ্রসর হয়ে চলেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের গণতন্ত্রকে একমাত্র রক্ষা করতে পারে বিচারব্যবস্থা।”
এদিন ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জিউরিডিক্যাল সায়েন্সেস-এর সমাবর্তনে যোগদান করেন মুখ্যমন্ত্রী; যেখানে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিও। এই অনুষ্ঠান থেকে দেশের গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্র পরিকাঠামোকে রক্ষা করার দাবি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, “মানুষের জন্য আইন। বিচার ব্যবস্থা হলো আমাদের কাছে মন্দির, মসজিদ এবং গির্জার মতো। মানুষের স্বাধীনতা রক্ষা করা এবং সকলের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে আমাদের বিচার ব্যবস্থা। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপের দিকে অগ্রসর হয়ে চলেছে। আপনারা (আইনজীবীরা) সামনের দিকে এগিয়ে আসুন।”
পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বর্তমানে বিচার হওয়ার আগে মিডিয়া ট্রায়াল হয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিচারব্যবস্থাকে কখনই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না মিডিয়া। মানুষের সম্মান নষ্ট করছে এরা। আমাদের কাছে সম্মানই হল সবচেয়ে বড়। তাই আমি বিচার ব্যবস্থার কাছে অনুরোধ জানাতে চাই, যারা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন এবং পরবর্তীতে যারা এখানে যুক্ত হবেন, তারা সকলে দেশের গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে রক্ষা করুন।”
পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, “ললিতজির আর দুমাস বাকি রয়েছে। এরপর উনি অবসর গ্রহণ করবেন। বিচার ব্যবস্থার ওপর যে মানুষের বিশ্বাস একদম নেই, তা আমি কখনোই বলবো না। তবে দেশের পরিস্থিতি যেভাবে খারাপ হয়ে চলেছে, সেখান থেকে মানুষকে একমাত্র রক্ষা করতে পারে আমাদের বিচার ব্যবস্থা। মানুষের কান্না শোনা হোক।”
প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিজেপি সরকারের আমলে মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে অন্যান্য একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের পরিস্থিতি যে ভালো না, সে বিষয়ে আগেও একাধিকবার মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে বর্তমানে একের পর এক দুর্নীতির ইস্যুতে কোণঠাসা তৃণমূল কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে মিডিয়া ট্রায়ালের বিরুদ্ধে একাধিকবার গর্জে উঠতে দেখা যায় তৃণমূল নেতৃত্বকে। সেই প্রসঙ্গেই এদিন পুনরায় একবার নিজের অনড় অবস্থান বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।