পুরনো ইতিহাস ভুলে নির্বাচনে “একলা চলো” নীতি মমতার! লাভ হবে বিজেপির? প্রকাশ্যে রিপোর্ট

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ তথা বিজেপির (Bharatiya Janata Party, BJP) বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে লড়াইয়ের জন্যে “ইন্ডিয়া” জোট গঠিত হয়েছে। আশা করা হয়েছিল, “ইন্ডিয়া” জোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেসের সঙ্গে বাংলায় কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হবে। সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ইতিমধ্যেই মমতা জানিয়েছেন, বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে ৪২ টি আসনে একা লড়বে কংগ্রেস। এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত আদৌ রাজনৈতিক বিচক্ষণতার পরিচয় কিনা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল সুপ্রিমো আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে “একলা চলো”-র পথ নেওয়ায় বাংলায় কার্যত “ইন্ডিয়া” জোট শক্তি হারাল। সেক্ষেত্রে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির “ইন্ডিয়া” জোট তৈরি করার প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও ভোটের মুখে চর্চা শুরু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের “একলা চলো’-র মনোভাব ব্যাখ্যা করতে গিয়ে দাবি করেছেন, তৃণমূল ধর্মনিরপেক্ষ দল। বাংলার মাটিতে বিজেপিকে পরাস্ত করতে তৃণমূল কংগ্রেসের একার শক্তি যথেষ্ট।

২০১১ সালে বাংলায় ৩৪ বছরের বাম আমলের অবসান ঘটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতাসীন হওয়া নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক ঘটনা। এছাড়াও, সারা দেশে বর্তমানে একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। “ইন্ডিয়া” জোট গঠিত হওয়ার পর বাংলায় বিজেপি বিরোধী আন্দোলন আরও জোরালো হবে বলেই রাজনৈতিক মহল আশা করেছিল। এমতাবস্থায়, ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হলে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের একক শক্তি কতদূর পর্যন্ত কার্যকর হল প্রমাণিত হবে সেই বিষয়টিও।

Mamata Banerjee will fight the elections alone, forgetting the old history.

উল্লেখ্য যে, “ইন্ডিয়া” জোটে ভাঙন ধরতে শুরু করেছে বেশ কিছুদিন ধরেই। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার “ইন্ডিয়া” জোট ছেড়ে এনডিএ-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে হাত না মেলানোয় জোর বিরোধ শুরু হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস বনাম তৃণমূল কংগ্রেসের। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, “২০১১ সালে কংগ্রেসের সহযোগিতা না পেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলায় ক্ষমতাতেই আসতে পারতেন না। কংগ্রেসের করুণায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”। পাশাপাশি, মমতাকে সুবিধাবাদী রাজনীতিক হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন অধীর রঞ্জন।

আরও পড়ুন: “আমি লজ্জিত, দয়া করে এটা বলবেন না”, ভক্তদের উদ্দেশ্যে “বিব্রত” বিরাট, দিলেন বড় প্রতিক্রিয়া

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে “ইন্ডিয়া” জোটের শরিক কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে আসন রফা না হওয়ার ফলে বিজেপি কার্যত সুবিধাজনক অবস্থা পেল। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করছেন, তৃণমূলের “একলা চলো” নীতি নিয়ে অযথা নাকগলানো বরদাস্ত করবেন না তিনি। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস দু’টি লোকসভা আসনে জয়লাভ করেছে। আর তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা ২২ টি আসনে জয়লাভ করেন।

আরও পড়ুন: লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া! নাম বদল করে IPL-এর মঞ্চে মাঠে নামবে RCB, হল বড় ঘোষণা

বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একত্রে লড়াই করেছেন ২০০১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। এছাড়াও, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস হাতে হাত মিলিয়ে লড়েছে। ২০১১ সালের বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনেও একই কৌশল নেওয়া হয়েছিল। পুরনো সেই ইতিহাস ভুলে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে কেন কংগ্রেসকে ত্যাজ্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও সেই বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর