বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের নির্বাচনের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস গতকাল শুক্রবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। শাসক দল ২৯৪ টি আসনের মধ্যে ২৯১ টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছেন। বাকি তিনটি আসন বাদ রাখা হয়েছে তৃণমূলের শরিক দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জন্য। এবারে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় অনেক চমক রয়েছে। এবার তৃণমূল ৫০ জন মহিলা প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছে। এছাড়াও তালিকায় মুসলিম প্রার্থীর সংখ্যা কমে গিয়েছে।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর প্রতিটি আসনের জন্য আলাদা করে রণনীতি তৈরি করেছেন। আর ওনার কথা মতই মহিলাদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং মুসলিম প্রার্থীদের সংখ্যা কমানো হয়েছে। এছাড়াও ২৮ বিধায়কের টিকিট কাটা হয়েছে। তবে দলে আগত নতুন সেলিব্রিটিদের প্রার্থী বানানো হয়েছে। আর এই নিয়ে দলের অন্দরেই ক্ষোভ দেখা গিয়েছে।
২০১৬ এর নির্বাচনে রাজ্যের মুসলিমরা মন খুলে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিলেন। এবারের নির্বাচনেও মুসলিমদের থেকে বড় আশা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু দুই মুসলিম নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই আশায় জল ঢালার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। একজন হলেন ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী। আরেকজন হলেন AIMIM এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। রাজ্যের মুসলিমদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় আব্বাস সিদ্দিকী। এছাড়াও AIMIM প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও মুসলিমদের ভোট ভাগ করতে পারেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১১ সালে তৃণমূল ২৮ জন মুসলিমকে প্রার্থী বানিয়েছিল। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে ৫৭ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাত্র ৪২ জন মুসলিমকেই প্রার্থী করেছেন। হিন্দু ভোট যাতে ভাগ না হয়ে যায়, সেই ভয়েই মুখ্যমন্ত্রী মুসলিমদের সংখ্যা করমিয়ে হিন্দু প্রার্থী বেশি করেছেন।
রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি বরাবরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুসলিম তোষণের অভিযোগ করে এসেছে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্যে এসে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করে বলেছেন, এই সরকারের আমলে রাজ্যে দুর্গাপুজো হতে দেওয়া হয় না। সরস্বতী পুজো বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশেষত বিজেপি রাজ্যে হিন্দুদের ভোট নেওয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আর হিন্দু ভোটাররা যাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে না যায়, সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী এবারের প্রার্থী তালিকায় মুসলিমদের সংখ্যা কমিয়েছেন।