বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। কোটি কোটি টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি একের পর এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে আসতে চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে গিয়েছে খোদ তদন্তকারী সংস্থার আর এবার বিতর্ক আরো উস্কে দিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) সহযোগী তাপস মণ্ডল (Tapas Mondal)। তাপসবাবুর দাবি, “নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে পড়ুয়াদের কাছ থেকে প্রায় ২১ কোটি টাকা তুলেছেন মানিক ভট্টাচার্য”, যা ঘিরে ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র।
সাম্প্রতিক সময়ে এসএসসি থেকে প্রাথমিক টেট এবং অন্যান্য একাধিক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সরগরম গোটা বাংলা। সিবিআই এবং ইডির মতো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির তদন্তের মাধ্যমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, অশোক সাহাদের মত একাধিক তৃণমূল নেতা মন্ত্রী এবং শিক্ষা আধিকারিকরা হেফাজতে। অপরদিকে, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে পরিস্থিতি। সম্প্রতি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে সেই বিতর্ক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
উল্লেখ্য, মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতারের পর থেকে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য এসেছে তদন্তকারী সংস্থার হাতে। একইসঙ্গে মানিকের সহযোগী তাপস মণ্ডলকেও অতীতে বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই ধারা বজায় রেখে গতকাল তলব মাঝে সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছে যান তাপসবাবু।
সিজিও কমপ্লেক্স-এ প্রবেশের মুখে তাপস বলেন, “ডিএলএড কলেজে অফলাইন মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রতিটি পড়ুয়াদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়ে থাকত। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ টাকাটাই চলে যেতে মানিক ভট্টাচার্যের কাছে।” পরবর্তীতে তদন্তকারী সংস্থার অফিস থেকে বেরোনোর সময় তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে মোট ২১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছিল।” এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে ইতিমধ্যেই চক্ষু চড়ক গাছ সকলের।
প্রসঙ্গত, ইডি অতীতেই একাধিকবার দাবি করে, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের সহযোগী হিসেবে তাপস মণ্ডল পড়ুয়াদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নিতেন। এক্ষেত্রে গতকাল তাপসের বয়ান তাদের সেই দাবিকেই এক প্রকার প্রমাণ করল। একইসঙ্গে তাপসবাবু বলেন, “সব মিলিয়ে ২১ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে। তবে ছাত্রের সংখ্যার হিসেব সঠিকভাবে মেলানো যায়নি। কাল এসে সকল হিসেব মিলিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানিয়েছি।”
এক্ষেত্রে অতীতেও একাধিক সময় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফ থেকে তাপস মণ্ডলকে জেরা করার জন্য তলব করা হয়। তবে গতকাল দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ এবং পরবর্তীতে আরো বেশ কয়েক দফায় জেরা করার মাধ্যমে দুর্নীতি কাণ্ডে একাধিক নয়া তথ্য উঠে আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে।