বাংলাহান্ট ডেস্ক : রামপুরহাট গণহত্যা কাণ্ডের পর আনারুল এবং ভাদু শেখের প্রাসাদোপম বাড়ি দেখে চোখ কপালে উঠেছিল রাজ্যবাসীর। এবার বিতর্কের কেন্দ্রে আর এক তৃণমূল নেতার বাড়ি। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা মোদাচ্ছের হোসেনের ‘লাভ হাউস’-এর উপরেই এবার ‘শ্যেণদৃষ্টি’ পড়েছে বিরোধীদের।
চার তলা বিশিষ্ট ২০ হাজার বর্গ ফুটের রঙ বেরঙের প্রাসাদটির নাম লাভ হাউস। বাড়ির দেওয়ালে জানলার বদলে রয়েছে একাধিক লাভ সাইন। আসলে ওভাবে হৃদয়ের আকারেই বানানো হয়েছে বাড়ির সারি সারি জানলা। সেই কারণেই বাড়িটির এহেন ‘প্রেম ময়’ নাম।
কিন্ত এরই মধ্যে বাড়িটিকে নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন সিপিএম নেতা তথা হাই কোর্টের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। আর সেই পিটিশনের উপর ভিত্তি করেই এফআইআর এর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আর তা নিয়েই শোরগোল ভাঙড়ের কাশীপুর থানা এলাকায়।
আদালতের নির্দেশে এফআইআর কার্যকরী করতে ইতিমধ্যেই বাড়িটি একদফা মাপজোক করা হয়েছে কাশীপুর থানার পুলিশ ও ভাঙড় ২ নম্বর ব্লক ভূমি সংস্কার দপ্তরের পক্ষ থেকে। সেই মতন রিপোর্ট আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন ভূমি সংস্কার দপ্তরের এক আধিকারিক।
একেবারে শুরুর দিনগুলি থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত মোদাব্বের হোসেন। গত পনেরো বছর ধরেই প্রধান-উপপ্রধান তিনি। এই মুহুর্তে ভোগালি ২ পঞ্চায়েতের প্রধান মোদাব্বের। একই সঙ্গে দলের অঞ্চল সভাপতিও বটে। এরই পাশাপাশি এলাকায় মাছ চাষের ভেরি এবং চাষের জমিও আছে তাঁর।
তৃণমূল নেতার দাবি, নিজের আয়ের টাকা থেকেই জায়গা কিনে ওই বাড়ি বানিয়েছেন তিনি। বাকি টাকার জন্য ঋণ নেওয়া হয়েছে ব্যাঙ্ক থেকে। আপাতত বাড়িটি বিভিন্ন দোকান এবং ব্যবসায়ীক কাজে ভাড়া দিয়ে সেই ভাড়ার টাকাতেই নাকি মেটানো হচ্ছে কিস্তি। মোদাব্বের জানিয়েছন, ‘নিজের টাকায় জমি কিনে বাড়ি বানিয়েছি। কোনও অসৎ উপায় অবলম্বন করিনি। বিরোধীরা চক্রান্ত করতেই এসব করছে।’
ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর মতে, মোদাচ্ছের একা নয়, তাঁর মতো ভাঙড়ের বহু নেতা আছেন, যাঁরা রাস্তা নির্মাণ, আবাস যোজনার বাড়ি, একশো দিনের কাজ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তদন্ত হলে ভাল।’ উল্লেখ্য, এই নিয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চায়নি তৃণমূল। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকায় সেই অজুহাত দেখিয়েই আপাতত মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁরা।