বাংলা হান্ট ডেস্ক: সারা বিশ্বে অন্যতম আলোচিত সামাজিক সংগঠনের নাম হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (Rashtriya Swayam Sevak Sangh)। ১৯২৫ সালে নাগপুরে কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এমতাবস্থায়, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পূরণ হবে। এদিকে, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের পরে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ ফের জিতবে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করলেও বিরোধীরা সেই দাবি মানছেন না।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিস্তৃতি ২০১৪ সালে মোদী ক্ষমতায় আসার পর দেশজুড়ে হু-হু করে বেড়েছে। প্রচুর সংখ্যক নতুন শাখা খোলা হয়েছে সারা দেশে। সঙ্ঘ যাতে ভারতের মাটিতে শতবর্ষে আরও বিস্তারলাভ করতে পারে এজন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে আদাজল খেয়ে আসরে নামা হয়েছে। সূত্রের খবর, বর্তমানে ভারতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রায় ৬০ হাজার শাখা চালু রয়েছে।
ইউপিও টু আমলে মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময় থেকে ২০১০ সাল নাগাদ ভারতের বুকে সঙ্ঘ প্রভাব বাড়াতে শুরু করে। সেইসময় থেকে লাগাতারভাবে ভারতের স্কুল এবং কলেজ পড়ুয়াদের কাছে সঙ্ঘের মতাদর্শ আকর্ষণীয় হতে শুরু করেছে। সেই ধারা এখনও অব্যাহত। গত ১০-১২ বছরে ভারতের মাটিতে সঙ্ঘে একের পর এক শাখা খুলেই চলেছে।তবে, স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারা ছাড়াও সমাজের নানা স্তরে সঙ্ঘের মতাদৰ্শ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বলে সঙ্ঘের দাবি। সূত্রের খবর, ২০২৫ সালে শতবর্ষ উপলক্ষে মতাদর্শগত প্রচার জোরদার করতে বই প্রকাশিত হবে। ওই বইটি লেখা হচ্ছে হিন্দুত্ববাদ ও জাতীয়তাবাদ বোঝাতে। এছাড়া সদস্য সংখ্যা বাড়ানোয় জোর দেওয়া হয়েছে আগামী বছরে ১০০ বছর পূর্তিকে লক্ষ্য রেখে।
আরও পড়ুন: পর্যটন, শিক্ষার হাল অবনতির পর দেশে আরেকটি মহাসংকট! তৃষ্ণায় হাহাকার মলদ্বীপে
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি অতীতে বিতর্কে জড়িয়েছেন হিন্দুত্ববাদ এবং হিন্দুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে। এদিকে, এই সঙ্ঘ যে হিন্দুত্ববাদ প্রচার করে তা সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদের রাজনীতি, দাঙ্গা, নারীসমাজকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখা থেকে আরম্ভ করে মেরুকরণের মতাদর্শকে ইন্ধন দেয় বলে কেবল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি নয়, একই অভিযোগ তুলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলি এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের একাংশ। তা সত্ত্বেও সঙ্ঘের বৃদ্ধি ঘটে চলেছে।
আরও পড়ুন: “ভারতের সাথে….”, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে চাপে পড়ে সুর নরম ট্রুডোর
বর্তমানে সারা দেশে সঙ্ঘের ৬০ হাজার শাখা সদস্যদের ৫৫ শতাংশ স্কুল-কলেজের পডু়য়া বলে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ সূত্রের খবর। ২০১৭ সাল থেকে এমনকি করোনা পরিস্থিতিতেও ফিবছর লক্ষাধিক যুবক সঙ্ঘের সদস্য হয়েছেন। শতবর্ষ উপলক্ষ্যে দেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ২০২৫ সালে সঙ্ঘ এরপর সম্প্রতি মতাদর্শগত প্রচার আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কৌশল কার্যকরী করতে বই প্রকাশের উদ্যোগ। বইয়ের কাজ চলছে বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের নেতৃত্বধীন ইউপিএ টু আমলে ২০১০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিবছর ভারতে ১,২০০ টি থেকে ১,৬০০ টি পর্যন্ত শাখা খুলেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। এখবরও জানা গিয়েছে সঙ্ঘ সূত্রেই।