অসম্ভব হলেও সত্যি! মানবশরীরের তাপ দিয়েই চার্জ করা যাবে মোবাইল, অনন্য উদ্ভাবন IIT-র গবেষকদের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: যুগের সাথে তাল মিলিয়ে একের পর এক অবাক করা উদ্ভাবন করছেন বিজ্ঞানীরা (Scientists)। যেগুলি প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব ফেলে জনজীবনে। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, IIT মান্ডির (IIT Mandi) গবেষকরা এমন উপাদান তৈরি করেছেন যা দক্ষতার সাথে শরীরের তাপকে বিদ্যুতে রূপান্তরিত করে। এমতাবস্থায়, এই দুর্দান্ত গবেষণা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির সেক্টরের জন্য সুদূরপ্রসারী প্রভাব প্রদান করতে পারে। কারণ এগুলি সরাসরি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

জানিয়ে রাখি যে, থার্মোনিউক্লিয়ার উপাদান সম্পর্কিত এই ঘোষণাটি গত বছরের জুন মাসে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান দ্বারা সামনে আনা হয়। তবে এটি এখন জার্মানির সায়েন্টিফিক জার্নাল Angewantde Chemie-তে প্রকাশিত হয়েছে। যার নেতৃত্বে ছিলেন IIT মান্ডির স্কুল অফ ফিজিক্যাল সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক অজয় ​​সোনি। পাশাপাশি, থার্মোইলেক্ট্রিক জেনারেটর কিভাবে কাজ করে তা ব্যাখ্যা করে তিনি গত সপ্তাহে এক্স মাধ্যমে একটি পোস্টও শেয়ার করেছেন।

ওই পোস্টে তিনি জানান “নমনীয় থার্মোইলেক্ট্রিক জেনারেটর এবং হিউম্যান টাচ সেন্সরের ফলে থার্মোইলেক্ট্রিক প্রভাবের বিষয়ে আমাদের সাম্প্রতিক কাজের চূড়ান্ত সংস্করণ @angew_chem-এ প্রকাশিত হয়েছে।” গবেষণা অনুসারে, ডিভাইসটি শুধুমাত্র মানুষের স্পর্শে চার্জ করা শুরু করবে এবং এটি প্রায় যেকোনো ইলেকট্রনিক গ্যাজেট চার্জ করতে পারে। গবেষণা দল সিলভার টেলুরাইড ন্যানোওয়ার থেকে থার্মোইলেক্ট্রিক মডিউল তৈরি করেছে। পাশাপাশি, দলটি দেখিয়েছে যে ডিভাইসটি মানুষের স্পর্শে একটি উল্লেখযোগ্য আউটপুট ভোল্টেজ সরবরাহ করতে শুরু করে। এই আবিষ্কারের প্রসঙ্গে ডক্টর সোনি জানান, “স্বল্প শক্তির নমনীয় ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলিকে চার্জ করা আর কোনো সমস্যা নয়। এই ডিভাইসগুলি মানবদেহের তাপ দ্বারা চার্জ করা হবে। আমরা এর জন্য একটি থার্মোইলেক্ট্রিক মডিউল তৈরি করেছি।”

আরও পড়ুন: হেলায় ছাড়েন হাজার কোটির কোম্পানি, নিজের ব্যবসায় তৈরি করেন নজির, মল্লিকার সম্পদ টেক্কা দেবে আম্বানিকেও

থার্মোইলেক্ট্রিসিটি কি: সায়েন্স ডাইরেক্ট অনুসারে, এটি দু’টি সম্পর্কিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাপকে বিদ্যুতে বা বিদ্যুৎকে তাপে সরাসরি রূপান্তর করে। থার্মোইলেক্ট্রিক প্রভাবের প্রথম অংশ অর্থাৎ তাপকে বিদ্যুতে রূপান্তরের বিষয়টি ১৮২১ সালে এস্তোনিয়ান পদার্থবিদ টমাস সিবেক আবিষ্কার করেছিলেন এবং ফরাসি পদার্থবিদ জিন পেল্টিয়ার আরও বিস্তারিতভাবে অনুসন্ধান করেছিলেন। এমতাবস্থায়, অধিকাংশক্ষেত্রে এই বিষয়টিকে পেল্টিয়ার-সিবেক এফেক্ট হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন: অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের জন্য বড় পদক্ষেপ! এবার চিকিৎসায় বাড়ল সুবিধা, হয়ে গেল ঘোষণা

এদিকে, এর বিপরীত ঘটনায় একটি উপাদানের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক প্রবাহ চালিয়ে সেটিকে গরম বা শীতল করা যায়। ১৮৫১ সালে এটি উইলিয়াম থমসন আবিষ্কার করেছিলেন। যিনি লর্ড কেলভিন নামেও পরিচিত (যার নামে পরম কেলভিন তাপমাত্রা নামাঙ্কিত রয়েছে)।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর