বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ অনেকের মতে চলতি বিশ্বকাপে (2023 ODI World Cup) মহম্মদ শামি (Mohammad Shami) যেন অনেকগুলি ক্ষেত্রে সমালোচকদের মুখ বন্ধ করানোর জন্য মাঠে নামছেন। কেউ বলছেন প্রাক্তন স্ত্রী হাসিন জাহানের তৈরি করা সমস্যা সত্ত্বেও তিনি সকলকে দেখিয়ে দিতে চাইছেন যে ইচ্ছাশক্তি থাকলে সবকিছুই সম্ভব। বলছেন কিছু বছর আগে খারাপ পারফরম্যান্সের সময় তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী তার অভিযোগ যারা তুলেছিল তাদের মুখ বন্ধ করানোর জন্য মাঠে নামছেন তিনি। আবার অনেকে বলছেন চলতি বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) প্রথম কয়েকটি ম্যাচে রোহিত শর্মা যে তাকে সুযোগ দেননি, এখন তিনি হিটম্যানকে ভুল প্রমাণ করার লক্ষ্য নিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে চলেছেন।
কিন্তু মুম্বাই থেকে বৃহস্পতিবার যখন বিমানযাত্রা করে আহমেদাবাদে ভারতীয় দলের সঙ্গে শামি হেঁটে এসে টিমবাসে উঠলেন, তখন তার ভাবলেশহীন মুখ দেখে কেউ বলতে পারবে না যে তার মনের ভেতর সত্যিই এই বিষয়গুলো কাজ করছে কিনা। বিশ্বকাপে তিনি একের পর এক রেকর্ড ভেঙেছেন এবং নিজেকে ইতিহাসের পাতায় তুলে নিয়ে গিয়েছেন। শেষ ম্যাচে একটি অসাধারণ পারফরম্যান্স তাকে ভারতের ইতিহাসের সেরা ফাস্ট বোলারে পরিণত করতে পারে। কিন্তু শামিকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি এইসব ব্যাপারগুলো নিয়ে আদেও চিন্তিত কিনা।
শামির এখন লক্ষ্য একটাই। সেটা হলো যেনতেন প্রকারেণ দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক পারফরম্যান্স করে নিজের মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন তিনি। তিনি নিজের মাকে আশ্বস্ত করেছেন যে বিশ্বকাপ জিতে মাথা উঁচু করে তবেই নিজের বাড়িতে ফিরবেন। ভারতীয় সমর্থকরাও মনেপ্রাণে সেই প্রার্থনাই করছেন।
আরও পড়ুন: সৌরভ, সচিনকে ছুঁলেন শামি! ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবার ঘটলো এমন ঘটনা
ভারতের এই তারকা পেসারকে নিয়ে বলিউডি গসিপ, ধোঁকা খাওয়া প্রেমিক, রাজনৈতিক ও ধৰ্মীয় বিতর্ক, সমস্ত কিছুই হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে এসবের বাইরে শামি কিভাবে ভারতের মাটিতে চলতি বিশ্বকাপে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক পেসার হয়ে উঠেছেন, সেটাও চিন্তা করার মতো বিষয়। সেমিতে ৭০০-এর রান হওয়া ওয়াংখেড়ের পিচে নিউজিল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে তফাৎ গড়ে দিয়েছিলেন শুধুমাত্র তিনি। বোলারদের জন্য কার্যত বধ্যভূমিতে সাতটা উইকেট কিভাবে নিলেন তিনি?
আরও পড়ুন: ঝগড়া অতীত! সচিনের রেকর্ড ভাঙার পর বিরাট কোহলিকে কোন সম্মান দিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়?
নতুন বল হাতে শামি যে অসাধারণ সেটা সকলেই জানেন। তাই যশপ্রীত বুমরা বা সিরাজের একটা খারাপ দিনে শামির ডেভন কনওয়েকে ও রাঁচিন রবীন্দ্রকে ফেরানোটা খুব একটা বড় আলোচনার বিষয় নয়। কিন্তু তার পরের উইকেটগুলো? সকলে এতদিনে নজর করে ফেলেছেন নিশ্চয়ই যে বল ডেলিভারি করার ঠিক আগে শামির কব্জি কিছুটা বাঁকা থাকে। তার দুটো আঙুল অন্যান্য সুইং নির্ভর বোলারদের তুলনায় বেশ কিছুটা বলের উপর ছড়ানো থাকে। যার জন্য যখনই তিনি বলের সিম পিচের ওপর সজোরে আছাড় মারছেন, তখন বল উইকেট থেকে ভিতরের বা বাইরের দিকে বাড়তি মুভমেন্ট আদায় করছে। ব্যাটারদের পক্ষে তো বটেই স্বামী নিজেও সব সময় জানেন না যে বলটা কতটা দিক পরিবর্তন করবে মাটিতে পড়ার পর। তিনি ক্রস সিম গ্রিপে বিশ্বাসী নন। যারা ক্রস শিপ ব্যবহার করে তাদেরকে তিনি ভীতু বোলার মনে করেন এমনটা একবার শোনা গিয়েছিল। শুধুমাত্র সুইংয়ের ওপর নির্ভর না করে ভারতীয় পরিস্থিতিতে বলের সিমকে এমন ভাবে কাজে লাগাচ্ছেন যা আগে খুব বেশি কেউ করে দেখাতে পারেননি। সেই জন্যই হয়তো তিনি এতটা সফল।