বাংলাহান্ট ডেস্কঃ এক তৃণমূল নেতা ও এক কর্মীর (TMC) হাত থেকে মেয়ের সম্মান বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হল মায়ের। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার উত্তাল হয়ে উঠল হাওড়ার বাগনান (Bagnan of Howrah) এলাকা। জানা গিয়েছে মৃত মায়ের নাম সীমা দত্ত (৫০)।
জানা গিয়েছে মঙ্গলবার রাতে বাগনান থানার গোপালপুর দত্ত পাড়ার বাসিন্দা সীমা দেবীর বাড়িতে আচমকাই ঢুকে পড়ে পড়ে এলাকার তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত কুশ বেরা ও তার এক সঙ্গী শোভন বেরা। তারা সটান ছাদে উঠে যায়। সেখানে সীমা দেবীর বাইশ বছরের মেয়ে মোবাইলে চ্যাট করছিল ।
ফোনে মগ্ন থাকার সুবাদে ওই দুই যুবক তরুনীকে জড়িয়ে ধরে ধর্ষনের চেষ্টা করে ।সেই সময়ে ওই তরুনীর মা ছুটে বাধা দিতে এলে তাকে সরাসরি ধাক্কা দিয়ে ঠেলে ফেলে দেয় তারা। এরপর তারা পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে গুরুতর জখম সীমা দেবীকে উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়।
এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার মানুষ ছয় নং জাতীয় সড়ক অবরোধ করে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার প্রতিবাদ করে দোষীদের সাজার দাবীতে পথে নামে বিজেপি। বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় ও সৌমিত্র খাঁন ঘটনাস্থলে আসেন। কথা ওই তরুনী ও তার বাবার সঙ্গে ।
এরপর বাগনান থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। উত্তেজনা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন হাওড়া গ্রামীন পুলিশের উচ্চ পদস্থ কর্তারা। প্রায় তিন ঘন্টা ধরে কার্যত হুলস্থুল কান্ড ঘটে গোপালপুর ও জাতীয় সড়ক এলাকায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় নামানো হয়েছে রাফ। উল্লেখ্য কুশের স্ত্রী বাগনান দুই নং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা। মেয়ের সম্মান বাঁচাতে মায়ের মৃত্যু ঘটনায় বাগনানের মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছে।বিধায়ক অরুনাভ সেন জানান ,” অভিযুক্ত যে ই হোক তাকে রেয়াত করা হবে না। “অন্যদিকে লকেট চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের মহিলাদের নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ করেছেন।
এদিকে এদিন বিজেপি নেত্রী লকেট চ্যাটার্জী অভিযোগ করে বলেন যিনি মারা গেছেন তাঁর করোনা টেষ্ট করাতে চাইছে পুলিশ। যাতে পুলিশ করোনায় মৃত্যু হয়েছে বলে প্রমান করতে পারে। মোটের উপর পুলিশ মৃত্যুর কারন ঘুরিয়ে দিতে চাইছে বলে জানান ।
যদিও দোষী তৃণমূলের সঙ্গে জড়িত নয় বলে সাফ জানিয়েছেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। তিনি বলেন, “দোষ করলে কাউকে রেয়াত করা হবে না। আজকের ঘটনায় দোষীকে গ্রেফতার করা হবে। তবে বিজেপি ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। অভিযুক্ত তৃণমূলের কেউ নয়। মেয়েটির সঙ্গে অভিযুক্তের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাদের বাড়িতে সে গিয়েছিল। তখন মেয়েটির মাকে ধাক্কা মারে। হাসপাতালে তিনি মারা যান।”