বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ গোটা মরশুম ধরে তার দলের ভক্তরা চেয়েছেন যে তিনি আউট হোক। কারণ তাহলেই তারা তাদের প্রিয় মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে ব্যাটিং করতে দেখতে পাবেন। গোটা ব্যাপারটা নিয়ে একেবারেই সন্তুষ্ট ছিলেন না তারকা অলরাউন্ডার নিজেই। জবাব দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। আজ ফাইনালে শেষ দুই বলে ১০ রান বাকি এমন অবস্থায় ছক্কা ও চার মেরে গোটা মরশুমে ভক্তরা যার আউট হওয়ার প্রার্থনা করেছেন তিনি মসিহা হয়ে তাদের হিরো মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হাতে নিজের পঞ্চম আইপিএল ট্রফি তুলে দিলেন।
টুর্নামেন্টে চলাকালীন এমনটাও শোনা গিয়েছিল যে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির সঙ্গে রবীন্দ্র জাদেজার মনকষাকষি চলছে। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচে দুজনকে মাঠের মধ্যেই তর্কাতর্কি করতে দেখা গিয়েছিল। তবে ফাইনালের দিন ম্যাচ জেতানোর আনন্দে তাকে কোলে তুলে নিলেন ধোনি নিজেই।
আজ টসে হারার পর পাওয়ার প্লে-তে প্রথম দুই ওভার দেখে শুনে ব্যাটিং করে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। মনের অসাধারণ স্টাম্পিংয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার আগে গিল ২০ বলে ৩৯ রানের একটি অসাধারণ ইনিংস খেলে যান। ঋদ্ধিমান সাহা প্রথম ভারতীয় হিসেবে আইপিএল ফাইনালে শতরান এবং অর্ধশতরান করার রেকর্ড করেন।
কিন্তু গিলকে (৩৯) ভুলিয়ে ঋদ্ধিমান সাহাকে (৫৪) ফিকে করে ফাইনালে প্রথম ইনিংসে যাবতীয় নজর নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলেন সাই সুদর্শন। চলতে আইপিএলে তিনি যখন যখন সুযোগ পেয়েছেন ব্যাট হাতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু ইনিংস খেলেছেন। আজ শুরুতে ধীর গতিতে ব্যাটিং করে ঋদ্ধিমান সাহার ওপর কিছুটা চাপ বাড়িয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ঋদ্ধি আউট হওয়ার তাকে আটকাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন ধোনি। তার ৫৭ বলে ৯৬ এবং হার্দিকের ২১ রানের অপরাজিত ক্যামিওতে ভর করে ২১৪ রান স্কোরবোর্ডে তুলেছিলেন হার্দিকরা।
এরপর বৃষ্টির জন্য দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা দীর্ঘক্ষণ বন্ধ থাকে। বৃষ্টি থামার পর যখন খেলা শুরু হয় তখন তা ২০ ওভার থেকে কমে ১৫ ওভারের হয়ে দাঁড়ায় এবং চেন্নাইয়ের টার্গেট কমে দাঁড়ায় ১৭১। রান তারা করতে নেমে শুরুটা অত্যন্ত ভালো করেছিলেন ডেভন কনওয়ে (২৬) ও রুতুরাজ গায়কোয়াড (৪৭)।কিন্তু নূর আহমেদ (২/১৭) অসাধারণ কৃপণ বোলিং করে দুজনকেই ড্রেসিংরুমে ফিরিয়ে গুজরাটকে ম্যাচে ফেরত আনেন।
এরপর অজিঙ্কা রাহানে (২৭) এবং আম্বাতি রায়ডু (১৯) দুর্দান্ত ক্যামিও খেলে আউট হন। শিবম দুবে (৩২*) ক্রিজে টিকে ছিলেন। এরপর ধোনি প্রথম বলেই ডেভিড মিলারদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন। চাপ তৈরি হয়ে গিয়েছিল মারাত্মক। মোহিত শর্মা শেষ ওভারে ১৩ রান বাকি এমন অবস্থায় প্রথম ৪ বলে কোন রানই দেননি বলতে গেলে। কিন্তু তারপর হার্দিক পান্ডিয়া, তার সঙ্গে এসে কিছু আলোচনা করেন এবং সেটাই হয়তো তার ছন্দ ভেঙে দেয়। এরপর যাদে যা কি করেছেন তা এতক্ষণে সকলেরই জানা হয়ে গিয়েছে। তিন উইকেট নিলেও মোহিত আইপিএল ফাইনালে ট্র্যাজিক নায়ক হিসেবেই থেকে গেলেন।