বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে জিতে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। এরপর থেকেই বিজেপি ওনার সদস্যপদ খারিজ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আর এরই মধ্যে মুকুলবাবুকে পিএসি চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করায় আবারও চটেছে বিজেপি। শুক্রবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এটাই ওদের লাস্ট টার্ম যা করার করে নিক।
আর এবার মুকুল রায়কে নিয়ে বড় বয়ান দিলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। মন্ত্রী বিজেপিকে বিঁধে বলেন, ‘মুকুলদা তো আপনাদেরই বিধায়ক। স্পিকার ওনাকে পিএসি চেয়ারম্যান করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পিছনে সরকারের কোনও ভূমিকা নেই।” উল্লেখ্য, এটাই প্রথম না যে মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরও তাঁকে বিজেপির সদস্য অথবা বিধায়ক বানানোর চেষ্টা চলছে। এর আগে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মুকুলবাবুকে বিজেপির লোক বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান করার প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘প্রথা অনুযায়ী বিরোধীদের পিএসি চেয়ারম্যান করা হয়। কিন্তু স্পিকার নিজের ইচ্ছে মতন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” বিজেপিকে পরামর্শ দিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে অযথা ঝগড়া করছেন কেন? মুকুল রায় তো আপনাদেরই বিধায়ক। নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি বন্ধ করে আপনারা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করুন। বিরোধীদের পিএসি চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হয়েছে। বিধানসভার অধ্যক্ষ এটা ঠিক করেন। এর সঙ্গে সরকারের কোনও যোগ নেই।”
শুক্রবার কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়কে PAC চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পিকার মুকুলবাবুকে নাকি বিজেপির সদস্যও বলে দাবি করেছেন। আর এই নিয়ে সরব হয় বিজেপি। মুকুল রায়কে পিএসি চেয়ারম্যান নিযুক্ত করার পরই বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেছে বিজেপির বিধায়করা। আর এরপরই সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ উগরে দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মুকুল রায়ের সদস্যপদ থাকে কী না সেটাই বড় প্রশ্ন। শুভেন্দুবাবু বলেন, রীতি অনুযায়ী ওই পদে বিরোধী দলের বিধায়কদের বসানো হয়। কিন্তু বিধানসভার অধ্যক্ষ দেশের আইনসভার প্রথা ভেঙে বেনজির সিদ্ধান্ত নিলেন। এটা দেশের সংসদীয় ইতিহাসে প্রথমবার এমন হল।
বিরোধীদলনেতা বলেন, স্পিকার বলেছেন, পিএসির ২০ জন সদস্যের মধ্যে বিরোধীদের ৬ জন সদস্য জায়গা পান। তবে এবার ৭ জনকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর সপ্তম ব্যক্তি হলেন মুকুল রায়। ওনার নামের প্রস্তাব তৃণমূলের সহযোগী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা করেছে আর সমর্থন করেছেন তৃণমূলের বিধায়ক। তাহলে মুকুল রায় বিজেপির প্রতিনিধি হলেন কি করে?
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে দলত্যাগবিরোধী আইন প্রয়োগের দাবি জানিয়েছি বিজেপি, স্পিকার তাঁর শুনানি আগামী ১৬ তারিখ করবেন। আমি সেদিন নিজে উপস্থিত থাকব। গতবার একই মামলার শুনানিই হয়নি। এবার তা হতে দেব না। স্পিকার সিদ্ধান্ত না নিলে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব। শুভেন্দুবাবু বলেন, এটাই ওদের শেষ টার্ম। যত ভোগ করার করে নিক।