দেশে বসেই করুন বিদেশ ভ্রমণ! জানেন ভারতের কোথায় রয়েছে এই পোর্তুগিজ গ্রাম?

বাংলা হান্ট ডেস্ক : মায়া নগরী মুম্বাই (Mumbai) সকলেরই অত্যন্ত প্রিয় একটি শহর। এই শহরের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে পুরনো ইতিহাস। সেই সাথেই এখানে মেলবন্ধন ঘটেছে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্কৃতির। জানলে অবাক হবেন এই মুম্বাইয়ের বুকেই রয়েছে ছোট্ট এক টুকরো পর্তুগাল (Portugal)। ঠিক যেন হাতে আঁকা রঙবেরঙের কাঠের বাড়ি।

মুম্বাই (Mumbai)-এর পর্তুগিজ গ্রাম

ইঁট-কাঠ-পাথরের কংক্রিটের জঙ্গল থেকে দূরে মুম্বাইতে (Mumbai) রয়েছে এমনই এক গ্রাম। যেখানে গেলে কারও মনে হতেই পারে তিনি  ভুল করে বোধ হয় পর্তুগালে চলে এসেছেন। আর এই গ্রামের অন্যতম মূল ইউএসপি  হল এখানকার চারিদিকে শহুরে ছোঁয়া থাকলেও প্রত্যেক বাড়িতেই রয়েছে পর্তুগীজ (Portuguese) স্থাপত্যের নিদর্শন।

   

তাই ‘খোটাচিওয়াড়ি’ (Khotachiwadi) নামে পরিচিত এই গ্রাম কিন্তু বিদেশের থেকে কোন অংশে কম নয়। কি ভাবছেন? কোথায় রয়েছে মুম্বাইয়ের (Mumbai) এই সেরা অফবিট  ডেস্টিনেশন? আসলে মালাবার পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই গ্রামের নামকরণের পিছনেও রয়েছে এক অজানা ইতিহাস। জানা যায়, একসময় এখানে নাকি বসবাস করতেন জেলেরা।

তাঁদের সাথেই থাকতেন কলি ও পাথরে সম্প্রদায়ের মানুষজন। এছাড়াও থাকতেন হাতেগোনা কয়েকজন মুম্বাইয়ের আদি নিবাসী। তবে এই গ্রামের অধিকাংশ জমির মালিক ছিলেন একজন ব্রাক্ষ্মণ। তাঁর নাম হরি খোট। জানা যায় তিনি নিজের জমি ভাগ করে পূর্ব ভারতের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর নাম থেকেই এই গ্রামের নাম হয় ‘খোটাচিওয়াড়ি’।

আরও পড়ুন : সিঙাড়া দেখলেই জিভে জল! বলতে পারবেন এর ইংরেজি নাম?

মুম্বাইয়ের এই পর্তুগিজ গ্রামের বাড়িগুলি পর্তুগিজ স্থাপত্যশৈলীতে বানানো। বাহারি রঙের এই বাড়িগুলির কোনটি লাল, তো কোনটি হলুদ রঙের। রঙের মতোই আলাদা প্রত্যেকটা বাড়ির নকশা। এখানকার বাড়িগুলি ১৯ শতকের স্থাপত্যশৈলীর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বেশিরভাগ বাড়ির সামনেই রয়েছে খোলামেলা বড় বারান্দা। উঠোনের মতোই দোতলায় ওঠার সিঁড়িও রয়েছে বাড়ির বাইরের দিকে। বিশেষজ্ঞদের দাবি এই গ্রামের বাড়িগুলি নিও ক্লাসিক্যাল এবং আর্ট ডেকো রীতির অভূতপূর্ব মিশ্রণ।

Mumbai

এখানে আগে মোট ৬৫টি বাড়ি ছিল। যদিও এখন তা কমতে কমতে এসে দাঁড়িয়েছে ২৮টিতে। এই গ্রামই এখন হয়ে উঠেছে মুম্বাইয়ের সেরা অফবিট ডেস্টিনেশন। প্রায়দিনই এখানে অনেক বিদেশি পর্যটক আসেন। জানা যায়, এখন এই গ্রামের বেশিরভাগ আদি বাসিন্দারা মুম্বাইয়ের বান্দ্রা, মাজগাঁও, মাহিম, কাইওয়াল এবং গিরগাঁও এলাকায় চলে গিয়েছেন।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর