বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote)। জোর কদমে চলছে সেই প্রস্তুতি। সভা, পাল্টা-সভায় মেতেছে শাসক-বিরোধী। একদিকে যেখানে ভোটে জয়লাভের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে সমস্ত দল, অন্যদিকে এরই মধ্যে দ্বিতীয়বার খোদ দলের পঞ্চায়েত প্রধানকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদার পর এবার নদিয়া (Nadia)। ফের ভিন্ন রূপে অভিষেক। প্রকাশ্য সভায় দলনেতার মুখে শোনা গেল সেই হুঙ্কার। ক্ষোভের নিশানায় তাতলার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান (TMC Panchayat Pradhan)।
পঞ্চায়েত প্রধানের উদ্দেশ্যে ঠিক কী হুঙ্কার দিলেন অভিষেক? পঞ্চায়েত প্রধানকে নিশানা করে এদিনের জনসভা থেকে অভিষেক বলেন, “পার্থপ্রতিম দে, মানুষ সার্টিফিকেট দিলে আপনি প্রধান, না হলে নন। ৪ বছরে যদি গ্রামে একবারও না যান, আপনার প্রধান থাকার অধিকার নেই। সোমবার সকালের মধ্যে আমার কাছে ইস্তফা পাঠিয়ে দেবেন। ব্লক সভাপতিদের বললাম, যেখানে প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার প্রভাব ব্লক সভাপতির ওপর পড়বে।”এদিনের জনসভা থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমি এখানে চাকদা ক্রস করার সময়, রানাঘাট ঢোকার পথে তাতলা ১ গ্রাম পঞ্চায়েত। পাড়ার নাম ধনিচা। গ্রামের নাম মহানালা গ্রাম। এখানে পঞ্চায়েত প্রধান আছেন? প্রধানকে জিজ্ঞেস করব, এখানে শেষ কবে গেছিলেন? প্রধান আছেন? ৪ বছর প্রধানের দেখা নেই। সে প্রধান থাকবে কেন?”
যেমনি কথা তেমনি কাজ। দলনেতার এই নির্দেশের পরই তড়িঘড়ি পদত্যাগ পত্র জমা দিলেন তাতলার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান। তাতলা ১ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন পার্থপ্রতীম দে। চাকদা ব্লক তৃণমূল সভাপতি, রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি ও চাকদার বিডিওকে তিনি তার পদত্যাগপত্র পাঠান বলে জানা গিয়েছে।
পার্থপ্রতীম দে তার পদত্যাগ পত্রে লিখেছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। দলীয় নির্দেশে ইস্তফা দিচ্ছি। পদত্যাগের ডেডলাইন সোমবার পর্যন্ত থাকলেও তার আগেই পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেন, যে কথা বলা হচ্ছে তা ঠিক নয়। প্রধান হওয়ার পর বহুবার গ্রামে গিয়েছি। প্রথম দিন থেকেই দলটা করি। আমি নতুন তৃণমূল নই। দল যেটা সিদ্ধান্ত নেব সেটাই মেনে নেব।
উল্লেখ্য, এদিনের সভায় দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন, মঞ্চে যারা বসে রয়েছেন তাদের প্রতি আমি বলল ২০০৮ সালে যদি সিপিএমের লাল চোখকে উপেক্ষা করে আমরা পঞ্চায়েত ভোটে জিততে পারি তাহলে ২০২২ সালে আমরা কেন শান্তিপূর্ণ ভোট করে ১৮৭টা গ্রাম পঞ্চায়েতে জিতব না? ভোট শান্তিপূর্ণ হবে। ভোট অবাধ হবে। ভোট গণতান্ত্রিক হবে, এই দায়িত্ব আমার। কথা দিয়ে যাচ্ছি। দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে, অভিষেকের হুঁশিয়ারি, যদি কেউ ভাবে গায়ের জোরে ভোট করব, গাজোয়ারি করব, গুন্ডামি, মস্তানি করব তাহলে তাদের ১ ঘণ্টার মধ্যে দল থেকে বের করব। আর ২ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনকে বলব তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নাও।