বাংলাহান্ট ডেস্ক:- বিহারে ভোটপ্রচারের মঞ্চে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও তীব্র রূপ নিল। কংগ্রেস এবং আরজেডির বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। কারণ, বিহারের দ্বারভাঙায় ভোটাধিকার যাত্রার কর্মসূচি চলাকালীন তাঁর প্রয়াত মা হীরাবেন মোদীর (Heeraben Modi) উদ্দেশে কুকথা শোনা গিয়েছিল। মঙ্গলবার বিহারে এক সমবায় সমিতির ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গ টেনে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, মৃত মাকে টেনে এনে বিরোধীরা শুধু তাঁকেই নয়, গোটা দেশের মা-বোনদের অপমান করেছে।
কুকথার কড়া জবাব নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi)
মোদী (Narendra Modi)। বলেন, “আমার মা আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলেন যাতে আমি কোটি কোটি মায়ের সেবা করতে পারি। আপনারা সকলেই জানেন, আমার মা আর জীবিত নেই। শতবর্ষ পূর্ণ করে তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। যাঁর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই, তাঁকে নিয়ে কুকথা বলা হয়েছে কংগ্রেস-আরজেডির মঞ্চ থেকে। এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত অপমান নয়, ভারতের প্রতিটি মা ও বোনের অপমান।” তিনি আরও যোগ করেন, “মা আমাদের কাছে পৃথিবীতুল্য, আত্মসম্মানের প্রতীক। বিহারে (Bihar) যা ঘটেছে তা অকল্পনীয়। আমি জানি, আমার মতোই আপনাদেরও কষ্ট পেয়েছে।”
মহিলা উদ্যোগপতিদের সহজে ঋণ দেওয়ার জন্য বিহারে নতুন সমবায় সংস্থা ‘জীবিকা নিধি সখ সখারি সংঘ লিমিটেড’-এর উদ্বোধন উপলক্ষে মোদী (Narendra Modi)। সরাসরি ২০ লক্ষ মহিলার সামনে বক্তব্য রাখেন। সেখানেই প্রয়াত মায়ের সংগ্রামী জীবনের কথা স্মরণ করে তিনি আবেগপ্রবণ হন। বলেন, “আমার মা অসুস্থ হলেও কাজ করতেন। এক এক পয়সা জমিয়ে আমাদের জামাকাপড় তৈরি করতেন। দেশের কোটি কোটি মা-ই এমনই সংগ্রাম করেন। দেবদেবীর থেকেও মায়ের স্থান উঁচুতে।”
এখানেই থেমে থাকেননি প্রধানমন্ত্রী। নাম না করে তীব্র কটাক্ষ করেন রাহুল গান্ধীকে। তিনি বলেন, “রাজার ঘরে জন্মানো রাজপুত্রেরা একজন দরিদ্র মায়ের এবং তাঁর ছেলের সংগ্রাম বুঝতে পারবেন না। তাঁরা সোনা-রুপোর চামচ হাতে জন্মেছেন। বিশ্বাস করেন বিহারের ক্ষমতা তাঁদের পরিবারের হাতে আছে। কিন্তু আপনারা একজন দরিদ্র মায়ের ছেলেকে প্রধানমন্ত্রী করেছেন। এটাই তাঁদের হজম হচ্ছে না।”
আরও পড়ুন:- SIR মামলায় বিরাট সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট! এবার নজর ৮ সেপ্টেম্বরে
উল্লেখ্য, ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনকে ঘিরে ‘ভোটচুরি’র অভিযোগ তুলেছিলেন রাহুল গান্ধী। সেই প্রতিবাদে কংগ্রেস-আরজেডি-সহ বিরোধী দলগুলি ভোটাধিকার যাত্রায় নামেন। ওই কর্মসূচির মঞ্চ থেকেই প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi)। মাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। সেই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে কৌশলী আক্রমণে কংগ্রেস ও আরজেডিকে ঘিরে ধরলেন মোদি।
রাজনৈতিক মহলের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মহিলাদের উদ্দেশ্যে এমন আবেগঘন ভাষণ এবং প্রয়াত মাকে ঘিরে আক্রমণাত্মক বক্তব্য বিহারের ভোটযুদ্ধে বিজেপির পক্ষে কার্যকর কৌশল হতে পারে। বিরোধীপক্ষকে কোণঠাসা করতেই এই ইস্যুতে জোর দিচ্ছেন মোদী। স্বাভাবিকভাবেই, রাজনীতির ময়দানে তাঁর এই বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস এবং আরজেডি।