বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সবচেয়ে জনপ্রিয় নরেন্দ্র মোদিই (Narendra Modi)। মুড অফ দা নেশন (Mood of The Nation) সার্ভেতে উঠে এল এই তথ্য। তবে জনপ্রিয়তা থাকলেও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং বেকারত্ব নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার যে ডাঁহা ফেল মেরেছে, তাও উঠে এল এই সার্ভেতে। শুধুমাত্র ভারতে নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও মোদির জনপ্রিয়তা ক্রমশই উপরে উঠছে। যেখানে, আমেরিকার জো বাইডেন, ফ্রান্সের ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ, কানাডার জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের কুমিও কিশিদার মতো রাষ্ট্রনেতাদের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে, সেখানে মোদি একাই ব্যাট খুলে ইনিংস খেলছেন।
মোদির বিশ্ব জুড়ে এই বিপুল জনপ্রিয়তার মূলে রয়েছে অর্থনৈতিক কারণ। ভারতের অর্থনীতি কোভিড-১৯ মহামারির আগের অবস্থার মতো শক্তিশালী না হলেও বিশ্বে যথেষ্ট সম্মানের জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে ভারত। কোভিড মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রভৃতি কারনে ধুঁকছে গোটা দুনিয়ার অর্থনীতি। আর্থিকে সংকটে বেহাল দশা পাকিস্তান, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার মতো এশিয়ার দেশগুলি। চিনের অবস্থাও তথৈবচ। কিন্তু ভারতে এই অর্থনৈতিক মন্দার আঁচ সেভাবে পড়বে বলেই জানিয়েছে আইএমএফ, ব্লুমবার্গের মতো সংস্থাগুলি।
২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে একটি সার্ভে হয়। সেখানে দেখা যায়, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জোর টক্কর লাগতে পারে মোদি-মমতার। কিন্তু সম্প্রতি সার্ভের রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, এই মুহুর্তে মোদির জনপ্রিয়তার ধারে কাছে কোনও ভারতীয় রাজনীতিক নেই।
আমেরিকার এক সার্ভে কোম্পানির রিপোর্টে দেখা গেছে বিশ্বে মোদির জনপ্রিয়তার রেটিং ৭৫ শতাংশ। দুনিয়ার বাকি তাবড় রাষ্ট্র নেতারা অনেকটাই পিছিয়ে। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তার রেটিং মাত্র ৩৮ শতাংশ।
সি ভোটার এবং ইন্ডিয়া টুডে ২০২২ সালে যৌথ ভাবে মুড অফ দা নেশন সার্ভে করে। সেখানে দেখা যায় ভারতে মোদির জনপ্রিয়তা ৬৬ শতাংত। আগস্ট ২০২১-এর থেকে প্রায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোভিড মহামারির আগে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জনপ্রিয়তা ছিল প্রায় ৭৮ শতাংশ। সেই অঙ্ক কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩.৪ শতাংশ। মোদির নিকটবর্তী রাহুল গান্ধী এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। এই দুজনেরই জনপ্রিয়তা দুই এর ঘরে পৌঁছায় নি। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী প্রথম স্থানে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন অটল বিহারি বাজপেয়ী। এর পর যথাক্রমে রয়েছেন ইন্দিরা গান্ধী, মনমোহন সিং এবং জওহরলাল নেহেরু।
মোদির সাফল্যের ৬ টি স্তম্ভ :
১) কাশ্মীর থেকে আর্টিকেল ৩৭০ এবং ৩৫ এ অবলুপ্ত করা।
২) অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের শুভ সূচনা।
৩) এখনও পর্যন্ত কোনও বড় দুর্নীতি সামনে আসে নি। রাফাল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলেও তা প্রমাণ হয়নি।
৪) করোনা কালে ভারতকে সঠিক দিশা দেখানো।
৫) ব্ল্যাক মানি বা কালো টাকার উপর কঠোর পদক্ষেপ।
৬) আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি।
ব্যর্থতার নজির : বেশকিছু সাফল্য পেলের ব্যর্থতার উদাহরণও রয়েছে প্রচুর।
১) করোনার সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার জন্য অনেকেই দায়ি করেন মোদিকে।
২) বেকারত্ব এখনও আকাশ ছোঁয়া। আকাল দেখা দিয়েছে সরকারি চাকরির বাজারেও।
৩) আর্থিক বৃদ্ধি হ্রাস মোদির বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ।
৪) একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থাকে ব্যক্তিগত মালিকানায় বিক্রি করে দেওয়া ভয়ঙ্কর অভিযোগ বারবারই উঠেছে মোদির বিরুদ্ধে।
৫) তিন কৃষি বিল নিয়েও বেশ কোনঠাসা অবস্থা হয় বিজেপির।
এত কিছুর পরও এখনও ভারতের বুকে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। তার একটি বড় কারণ যদিও বিরোধীদের দিশেহারা অবস্থা এবং প্রধান বিরোধী কংগ্রেসের পরিবারতান্ত্রিক মানসিকতা বলেই মনে করে ভারতের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।