বাংলাহান্ট ডেস্ক : নেতাই গণহত্যার (Netai Massacre) কথা মনে পড়ে? ২০১১ সালের সেই নৃশংস ঘটনায় কেঁপে ওঠে গোটা দেশ। আজ থেকে আট বছর আগে গ্রেফতার করা হয় নেতাই গণহত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তৎকালীন সিমিএমের (CPM) জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য ফুল্লরা মণ্ডলকে (Fullara Mandal)। আট বছর শাস্তি পেয়ে অবশেষে মুক্তি পেলেন তিনি। গত ২৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। আজ শুক্রবার কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ফুল্লরা। তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে মেদিনীপুর (Medinipore) কারাগার চত্বরে এ দিন উপস্থিত হন বহু বাম নেতা-কর্মী। ফুল দিয়ে শুভেচ্ছাও জানানো হয় ফুল্লরাকে। উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষও (Sushanta Ghosh)।
৮ বছর পর জেল থেকে বেরিয়ে ফুল্লরা বলেন ‘আমি আপ্লুত।’ মুক্তির স্বাদ তিনি দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চান বলে জানান ফুল্লরা। জেল চত্বরে উপস্থিত হয়ে সুশান্ত ঘোষ দাবি করেন, ফুল্লরা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তিনি দাবি করেন, শাসক দল বুঝেছিল ফুল্লরাকে জেলে না ঢোকালে ওই এলাকায় লাল ঝাণ্ডা নামানো যাবে না, তাই এই কাজ করা হয়। সুশান্ত ঘোষ আরও অভিযোগ করেন, গত ৮ বছরে একবারও প্যারোল দেওয়া হয়নি বাম নেত্রী ফুল্লরাকে। মা মারা যাওয়ার পরও তাঁকে প্যারোল দেওয়া হয়নি বলেই অভিযোগ। রাজ্য সরকারকে ‘অমানবিক’ বলেও আখ্যা দেন সুশান্ত। এ দিন ফুল্লরাকে ঘিরে বাম কর্মীদের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। নেতাই-কাণ্ডে যাঁরা আহত হন তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ফুল্লরার বিরুদ্ধে।
২০১১ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের লালগড় ব্লকের নেতাই গ্রামে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে। সিপিএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয়। ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়, ২৮ জন আহত হন। জেলার একাধিক বাম নেতার নাম জড়ায় ওই ঘটনায়। অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডে, ফুল্লরা মণ্ডল, চণ্ডী করণ সহ একাধিক বাম নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
প্রথমে এই মামলার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৩ সালে সিআইডির হাত থেকে এই মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। ২০১৪ সালে ২০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করেকেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ওই বছরেই ৩০ জুন ফুল্লরাকে গ্রেফতার করা হয়। আট বছর জেলেই ছিলেন তিনি। ৬৫ বছরের ফুল্লরাকে সুপ্রিম কোর্ট শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্তি দিল।
Made in India