বাংলাহান্ট ডেস্ক : আপাতত বড় স্বস্তি। পিছিয়ে গেল নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ড। ইয়েমেনে ধৃত কেরলের নার্সের মৃত্যুদণ্ড রুখে দেওয়ার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। জানা গিয়েছে, ভারতীয় আধিকারিকরা স্থানীয় জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে যোগাযোগ রেখে আসছে। পাশাপাশি প্রসিকিউটরের অফিস এবং স্থানীয় হুথি গোষ্ঠীর সঙ্গেও যোগাযোগ রয়েছে ভারতের। সব আশা যখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিল, তখনই খবর এল, নিমিশার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ড আপাতত পিছিয়ে দিয়েছে হুথি গোষ্ঠী। ভারতের সুন্নি মুসলিম নেতা কাঁথাপুরম আবুবকর মুসলিয়ার এই মামলায় হস্তক্ষেপ করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
পিছিয়ে গেল নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ড
ভারতের ‘মুফতি ই আজম’ মুসলিয়ার ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে একজন অত্যন্ত গণ্যমান্য ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত বলে মানা হয়। তিনি ইতিমধ্যেই ইয়েমেনের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি যে ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবদো মেহেদির খুনের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত নিমিশা প্রিয়া (Nimisha Priya), তাঁর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। যেকোনো ভাবেই হোক মৃতের পরিবারকে ‘ব্লাড মানি’ অর্থাৎ ক্ষতিপূরণ নিতে রাজি করিয়ে প্রিয়ার (Nimisha Priya) মৃত্যুদণ্ড আটকানোই মুসলিয়ারের উদ্দেশ্য ছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে এই আবহেই জানা গেল, আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
ভারতের বড় কূটনৈতিক জয়: নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya) পরিবার এই মামলায় ভারত সরকারের দ্বারস্থ হয়েছিল আগেই। নয়াদিল্লির তরফেও সবরকম ভাবে চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি সরকারের তরফে জানানো হয়, এ বিষয়ে কেন্দ্রের আর বিশেষ কিছু করার নেই। তবে সূত্রের খবর, নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya) পরিবার মামলার অপর পক্ষের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মতিতে একটি বিকল্প সমাধানে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে যাতে প্রিয়ার পরিবার আরও কিছুটা সময় পায় তার জন্য চেষ্টা করেছে ভারত সরকার। অবশেষে তাতেই কিছুটা সময় মিলেছে বলে খবর সূত্রের। ১৬ ই জুলাই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল নিমিশা প্রিয়ার (Nimisha Priya)। কিন্তু কতদিন পর্যন্ত তা স্থগিত করা হয়েছে সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
আরও পড়ুন : বিয়ের মরশুমে বড় স্বস্তি, শীঘ্রই ধস নামবে সোনার দামে! কততে ঠেকবে?
কেন এই শাস্তি ভোগ করছেন নিমিশা: ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের জেলে বন্দি রয়েছেন ভারতীয় (India) নার্স নিমিশা প্রিয়া। ইয়েমেনের এক নাগরিককে হত্যার অপরাধে ২০১৮ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে সে দেশের আদালত। কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা (Nimisha Priya) ২০০৮ সালে ইয়েমেনে চলে যান। সেখানে নার্সের কাজ শুরু করেন তিনি। ২০১১ সালে কেরলে টমি থমাসের সঙ্গে বিয়ে করেন তিনি। তাঁদের ইচ্ছা ছিল ইয়েমেনে একটি ক্লিনিক খোলার। কিন্তু স্থানীয় পার্টনার ছাড়া ক্লিনিক খোলা ইয়েমেনের আইন বিরুদ্ধ। এমতাবস্থায় তালাল আবদো মাহদি নামে এক ইয়েমেনি ব্যক্তির সঙ্গে মিলে ক্লিনিক খোলেন নিমিশা (Nimisha Priya)।
আরও পড়ুন : নামকরণ করেছিলেন মমতা নিজে, পুজোর আগেই ফের মা হল ‘তনয়া’, বড় উদ্যোগের চিন্তাভাবনা কর্তৃপক্ষের
সে সময়ে তাঁর স্বামী, সন্তান ছিলেন কেরলে। এদিকে নিমিশাকে ক্লিনিকের আয়ের অংশ দিতে অস্বীকার করার পাশাপাশি তাঁকে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অত্যাচারের অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর পাসপোর্টও কেড়ে নেন। এরপর ২০১৭ সালে পাসপোর্ট উদ্ধার করতে ওই ব্যক্তিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন নিমিশা। কিন্তু ওভারডোজে ব্যক্তির মৃত্যু হলে একজনের সাহায্যে মাহদির দেহ টুকরো টুকরো করে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন তিনি। কিন্তু ইয়েমেন থেকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে যান নিমিশা প্রিয়া।