আর নয় আগুন! চিরতরে বন্ধ হতে চলেছে “নরকের দরজা”

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার চিরতরে বন্ধ হতে চলেছে “নরকের দরজা” (Gateway to Hell)। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন! তুর্কমেনিস্তানের রাজধানী আশগাবাতের প্রায় ১৬০ মাইল উত্তরে অবস্থিত কারাকুম মরুভূমির মধ্যে রয়েছে একটি বিরাট গর্ত। প্রাকৃতিক গ্যাসের এই গর্তটিতে গত চার দশক ধরে আগুন জ্বলছে। এবার সেই আগুনই নেভানোর নির্দেশ দিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট গুরবাঙ্গুলি বেরদিমুখামেদভ।

যেহেতু, তুর্কমেনিস্তানে প্রবেশ করা সহজ নয়, তাই অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে পর্যটকের সংখ্যা কম। তবে, পর্যটকদের কাছে অন্যতম পছন্দের ডেস্টিনেশন ছিল এটি। ১৯৭১ সালে গ্যাস-ড্রিলিং ব্যর্থতার কারণে এই গর্তের জন্ম হয়েছিল। এটির ব্যাস প্রায় ৬০ মিটার এবং গভীরতা প্রায় ২০ মিটার।

তবে, কারাকুম মরুভূমির এই গর্ত নিয়ে নানান রহস্য রয়েছে। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, ১৯৬০-এর দশকে এই মরুভূমিতে বড় আকারের গর্ত তৈরি হয়। আর আশির দশকে আগুন জ্বলতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে তুর্কেমেনিস্তান সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কয়েকজন সোভিয়েত ভূতাত্ত্বিক তখন খনিজ তেলের সন্ধানে কারাকুম মরু অঞ্চলে অভিযান শুরু করেন।

এই উদ্দেশ্য নিয়েই সেখানে ড্রিলিং শুরু করলে কিছুদিনের মধ্যে তাঁরা বুঝতে পারেন যে, ভূ-গর্ভস্থ গ্যাসের এক ভাণ্ডারের উপরেই রয়েছেন তাঁরা। এরপর এর কয়েক জায়গায় গর্ত খুঁড়ে এই গ্যাসক্ষেত্রকে মুক্ত করা হয়েছিল। তবুও সেখানকার ভূ-গর্ভে জমে থাকা প্রাকৃতিক গ্যাস পুরোটা বের করা সম্ভব হয়নি।

যার ফলে ভূ-পৃষ্ঠের একটা বড় অংশ তাঁরা উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা ছিল যে, গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিষাক্ত গ্যাস আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে এবং বিপদের সৃষ্টি করবে। তাই তাঁরা এই গ্যাসক্ষেত্রটিতে অগ্নিসংযোগ করেন এবং ভেবেছিলেন কিছুদিন পর নিজে থেকেই এটি নিভে যাবে, কিন্তু তা হয়নি।

বিগত চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই গ্যাসক্ষেত্রটিতে ক্রমাগত আগুন জ্বলেই যাচ্ছে। যেই কারণে ওই দেশের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সরকারকে আগুন নেভানোর উপায় খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন।

কারণ তিনি মনে করেন এই প্রাকৃতিক সম্পদ যথাযথ ব্যবহার করলে দেশের অনেক লাভ হবে। উল্টে এটি পরিবেশগত ক্ষতি করছে। পাশাপাশি, এই গর্ত আশেপাশে বসবাসকারী মানুষের স্বাস্থ্যের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করছেন তিনি।

Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

X