বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কার্যত বলতে গেলে টোকিওতে শতবছরের শাপমুক্তি ঘটালেন নীরজ। অলিম্পিকে অ্যাথলেটিক্সে ভারত পদক লাভ করেছিল আজ থেকে ঠিক ১২১ বছর আগে। সেবার দুটি রূপো জয় করেছিলেন বৃটিশ-ভারতীয় নর্ম্যান প্রিচার্ড। ২০০ মিটার এবং ২০০ মিটার হার্ডেলস রেসে রূপো জয় করেন তিনি। তারপর এই দীর্ঘ অপেক্ষা, অ্যাথলেটিক্সে সেভাবে কোন বড় পদক পায়নি ভারত। এবার টোকিওতে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটালেন সুবেদার নীরজ চোপড়া।
২৩ বছর বয়সী নীরজ অবশ্য স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন ২০১৮ সালের কমনওয়েলথ গেমস থেকেই। সেবার অস্ট্রেলিয়ায় সোনা লাভ করেন তিনি, একই বছরে জাকার্তা এশিয়ান গেমসেও সোনা পান নীরজ। ২০০৮ সালের শেষবার অলিম্পিকে সোনা লাভ করেছিল ভারত, সেবার লক্ষ্যভেদ করেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা। শুনলে নিশ্চয়ই অবাক হবেন নীরজ তখনও খেলাই শুরু করেননি সেভাবে। তার বর্শা ছোঁড়ার অনুশীলন শুরু হয় ২০১১ সালে।
হরিয়ানা কৃষক পরিবারে বেড়ে ওঠা নীরজ প্রথমবার জাত চেনান ২০১৬ সালে পোল্যান্ডে ওয়ার্ল্ড জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে। সেবারও স্বর্ণপদক জয় করেছিলেন তিনি। আর এবার অলিম্পিকেও বজায় রাখলেন একই ধারা। তার ছোঁড়া বর্শা অতিক্রম করেছিল ৮৭.৫৮ মিটার দূরত্ব। তার জেরেই আজ স্বর্ণ পদক জিতে নিলেন ভারতীয় সেনার এই অন্যতম প্রতিনিধি। ভারতীয় সেনা লক্ষ্যভেদ আর দৃঢ় মানসিকতার জন্য সুপরিচিত। আজ সেই সেনাকেই গর্বিত করলেন নীরজ।
আজ এই গর্বের দিনে টুইট করে সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। তিনি লেখেন , “সুবেদার নীরজ চোপড়ার সোনা জয়ে সেনাবাহিনী গর্বিত। অলিম্পিকসে তিনি প্রকৃত সৈনিকের মতোই পারফর্ম করেছেন। সেনাবাহিনী সহ সারা দেশের কাছেই আজ গৌরবের দিন। তাঁকে অভিনন্দন জানাই।” এই কৃতীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। এদিন টুইটারে তিনি লেখেন, “টোকিওয় ইতিহাস তৈরি হল। নীরজ চোপড়া আজ যে কৃতিত্ব দেখালেন, মানুষ চিরকাল মনে রাখবে। সোনা জয়ের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানাই।”
অন্যদিকে নিজের অলিম্পিক পদক আজ ভারতের অসামান্য ক্রীড়াবিদ মিলখা সিংহকে উৎসর্গ করেন নীরজ। তিনই বলেন, “আমি আমার এই পদক মিলখা সিংহকে উৎসর্গ করতে চাই। আশা করি যেখানেই তিনি থাকুন আমাদের ঠিক দেখছেন।” নিজের শেষ জীবন অব্দি মিলখা বলতেন, তিনি একজন ভারতীয়কে অ্যাথলিটকে সোনা জিততে দেখে যেতে চান। মিলখার সেই স্বপ্ন পূরণ করলেন নীরজ।