বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাঘমুণ্ডি ব্লকের সিন্দরি গ্রামের দুখু মাঝি ওরফে ‘গাছদাদু’ এবার ভূষিত হলেন পদ্মশ্রী সম্মানে। সাইকেল করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বছরের পর বছর ধরে রোপণ করেন গাছ। এইভাবে রোপণ করেছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি গাছ। এলাকায় ‘গাছদাদু’ নামে পরিচিত দুখু মাঝি এবার পেলেন ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ৭৫ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে প্রকাশিত করা হয়েছে পদ্ম প্রাপকদের তালিকা। ৭৮ বছরের দুখু মাঝির নাম রয়েছে সেই তালিকায়। সামাজিক কাজ (পরিবেশ – বৃক্ষরোপণ) বিভাগে পদ্মশ্রী পুরস্কার দেওয়া হয়েছে দুখু মাঝিকে। সুন্দর পৃথিবীর লক্ষ্যে জীবনের পাঁচ দশক উৎসর্গ করেছেন দুখু মাঝি।
আরোও পড়ুন : পরনে সরকারি স্কুল ড্রেস, মাঠে চরে বেড়াচ্ছে ছাগল! অবাক করা কান্ডের সাক্ষী থাকল বাঘমুণ্ডি
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘একজন পরিবেশবিদ, যিনি বৃক্ষরোপণ করতে এবং সবুজ ভবিষ্যতের জন্য সচেতনতা বাড়াতে নিজের জীবনের পাঁচটা দশক উৎসর্গ করে দিয়েছেন।’ দুখু মাঝির সংগ্রাম শুরু হয় মাত্র ১২ বছর বয়সে। জীবনের ৭৮টা বসন্ত পার করে এসেও নিজের কাজে অবিচল দুখু মাঝি।
আরোও পড়ুন : শিক্ষক, রেশন দুর্নীতি অতীত! এবার স্কুলে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ঘিরে কোটি কোটি টাকা নয়ছয়, তোলপাড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা
আজও গাছ লাগানোর জন্য তিনি বেরিয়ে পড়েন সাইকেল নিয়ে। ফাঁকা জমি দেখতে পেলেই সেখানে রোপণ করেন গাছ। সরকারি তরফে বলা হয়েছে, , ‘প্রতিদিন নিজের সাইকেলে চেপে নতুন-নতুন জায়গায় গিয়ে ফাঁকা জমিতে ৫,০০০-র বেশি বটগাছ, আমগাছ এবং জামগাছ বসিয়ে ফেলেছেন (গাছদাদু)।’
গাছদাদু লাক্ষা চাষের জন্য প্রয়োজনীয় কুসুম, কূল বসানো শুরু করেন প্রথম জীবনে। পরবর্তীকালে বসান আরো বিভিন্ন গাছের চারা। বটগাছ, আমগাছ, জামগাছ, পলাশ গাছ, কাঁঠাল গাছ, কৃষ্ণচূড়ার মতো বিভিন্ন ধরনের গাছ তিনি বসিয়েছেন। শুধু গাছ রোপন করা নয়, সেই গাছগুলির পরিচর্যা করেন নিজের হাতে।
প্রত্যেকটি গাছ এই মানুষটার কাছে নিজের সন্তানের মতো। এমনকি তিনি বন দপ্তরের বিভিন্ন গাছের কাজেও হাত লাগিয়েছেন। অত্যন্ত কষ্ট করে সংসার চালানো এই মানুষটা এতদিন পাননি কোনও স্বীকৃতি। যদিও স্বীকৃতি, সম্মান, অর্থের প্রত্যাশা করেন না দুখু মাঝি। নিজের সন্তানের মতো অপত্য স্নেহ করেন গাছকে।