বাংলা হান্ট ডেস্ক: নিজের দেশেই বিমান হানা চালিয়ে রক্তগঙ্গায় বয়ে গেল পাকিস্তানের (Pakistan) খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ। রবিবার গভীর রাতে প্রদেশের তিরহা উপত্যকার মাত্রে দারা গ্রামে একাধিক বোমা ফেলে পাকিস্তানি বিমান বাহিনী। সরকারি দাবি, জঙ্গি দমনই ছিল মূল উদ্দেশ্য। তবে এই অভিযানে প্রাণ হারালেন ৩০ জন নিরীহ সাধারণ মানুষ। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন মহিলা এবং শিশু। আরও অনেকেই গুরুতর আহত, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন অনেক গ্রামবাসী। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে উদ্ধারকারীরা।
নিজের দেশেই বিমানহানা পাকিস্তানের (Pakistan)
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, রাত প্রায় ২টো নাগাদ পাকিস্তানি (Pakistan) বিমান বাহিনীর ফাইটার জেট ৮টি এলএস-৬ বোমা ফেলে গ্রামটিতে। মুহূর্তে গোটা এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভেঙে আতঙ্কে ছুটে বেরিয়ে আসেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু ততক্ষণে আগুন ও ধ্বংসস্তূপে ঢেকে গেছে চারপাশ। হতাহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে প্রতিনিয়ত।
আরও পড়ুন: ব্রহ্মোসের মতো শক্তি! ১,০০০ কিমি দূরে আঘাত হানতে সক্ষম, শীঘ্রই পরীক্ষা ভারতের নতুন ক্রুজ মিসাইলের
পাক (Pakistan) সেনার দাবি, ‘তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তান’ (TTP) জঙ্গিদের টার্গেট করেই এই হামলা চালানো হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ, জঙ্গিদের কোনও হদিস মেলেনি, বরং মারা গিয়েছেন সাধারণ মানুষ। শিশুরা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে পাক সেনার এ ধরনের অভিযানের ইতিহাস নতুন নয়। পারভেজ মুশারফের আমল থেকে বারবার টিটিপি জঙ্গিদের দমন করতে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান (Pakistan)। চলতি বছরও বেশ কয়েকবার ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। জুন মাসে ওই প্রদেশেই জঙ্গি দমনের নামে বিমান হানা চালানো হয়েছিল। অভিযোগ, তখনও সাধারণ মানুষের প্রাণহানিই বেশি হয়েছিল।
আরও পড়ুন:“পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিজেই ভারতের অংশ হবে”, রাজনাথের স্পষ্ট বার্তায় ঘুম উড়ল পাকিস্তানের
এই হামলার পর পাকিস্তান (Pakistan) সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র। সমালোচকদের দাবি, শাহবাজ শরিফের সরকার জঙ্গি দমনের নামে নিজেদের নাগরিকদের বিপদে ঠেলে দিচ্ছে। যথাযথ গোয়েন্দা তথ্য ছাড়া এমন হামলা কেন চালানো হচ্ছে, তা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে। খাদ্য ও জলের অভাব, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সংকটে জর্জরিত খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মানুষদের উপর এ ধরনের বিমান হানা যে পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
আন্তর্জাতিক মহলেও এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। একদিকে জঙ্গি দমনের প্রয়োজনীয়তা মানলেও, শিশু ও মহিলাসহ নিরীহ সাধারণ মানুষের মৃত্যুতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে পাকিস্তান (Pakistan) সেনার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নতুন করে অশান্তি বাড়তে পারে খাইবার পাখতুনখোয়ায়।