বাংলা হান্ট ডেস্ক: জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে জেরবার সারাবিশ্ব। কিন্ত মূল্যবৃদ্ধির (Inflation) বিশেষ প্রকোপ পড়েছে পাকিস্তানের (Pakistan) ওপর। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে খাদ্যদ্রব্যের। এরইমধ্যে গম নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির খবর সামনে আসছে। বিষয়টি সামনে আসতেই পাকিস্তানের কৃষি সংগঠন, ‘কিসান ইত্তেহাদ পাকিস্তান’ গম সঙ্কটের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে। সেদেশের হাজার হাজার কৃষক দেশ জুড়ে বিক্ষোভ চালাতে থাকেন।
আসলে পাকিস্তানের বাজারে গমের দাম কমেছে বেশ কিছুটা। ৪৯ কিলো গমের দাম পাকিস্তানি টাকায় ৩৯০০ টাকা। এটাই সেখানের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য। কিন্তু সেখানে গমের দাম এতটাই কমে হয়েছে যে, এর থেকেও কম দামে গম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষকের দাবী যে, তারা গমের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সেই কারণে বিভিন্ন বড় শহরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তারমধ্যে বেশ কয়েকজন কৃষককে গ্রেফতার অবধি করা হয়েছে।
পাকিস্তানের এই অবস্থার পিছনে রয়েছে গম আমদানি কেলেঙ্কারি। বিরোধীদের অভিযোগ, পাকিস্তানের তদারকি সরকারের সময় দুর্নীতি হয়েছে। তখন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা গম আমদানি করার অনুমতি দেওয়া হয়। এখন দেশে কত পরিমাণ গম উৎপাদিত হচ্ছে সেদিকে নজর দেওয়া হয়নি। গত ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে ২০২৪ সালের মার্চ মাস অবধি মোট ৩,৩০,০০০ কোটি পাকিস্তানি টাকার গম আমদানি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারেও গমের দাম বেশ অনেকটা পড়ে যায়।
একদিকে টানা গম আমদানি করা এবং অন্যদিকে দেশী কৃষকদের দিকে খেয়াল না রাখার কারণেই এই সমস্যা উদ্ভুত হয়েছে। গম আমদানি করার সাথে সাথে পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রার অবস্থা আরো শোচনীয় হয়েছে। কিন্তু তারপরেও গম আমদানি অব্যাহত রাখে পাক সরকার। এছাড়া এমনও অভিযোগ উঠেছে যে, বিদেশ থেকে যে গম আমদানি করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্ননামের। সেখান থেকেও কম দামে বিপুল মুনাফা কমিয়েছে বেসরকারি সংস্থাগুলি।
এদিকে চলতি বছর আবার পাকিস্তানে গমের ফলনও ভালো হয়েছে। তাই বিশেষ থেকে গম কেনার ফলে দেশীয় কৃষকদের থেকে গম কেনা ৫০% কমিয়ে দিয়েছে সরকার। পাকিস্তানে বিদেশী গম আসায় ন্যূনতম সহায়ক দামটুকুও পাচ্ছেন না কৃষকরা। ৪০ কেজি গম ৩৯০০ পাকিস্তানি রুপির পরিবর্তে বিক্রি করতে হচ্ছে ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকায়। সাথে বিভিন্ন সংস্থা তাদের দাম আরো অনেকখানি কমিয়ে দেওয়াতে বাজারেও দাম পাচ্ছেননা কৃষকরা।
আরও পড়ুন:চিপকের মাঠে শেষ ম্যাচ ধোনির? জল্পনা উস্কে পোস্ট চেন্নাইয়ের, রাখঢাক না রেখেই জবাব রায়নার
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়াতে ক্ষোভ এবং অসন্তোষ জন্মেছে কৃষকদের মধ্যে। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার দল বিষয়টি সম্পর্কে একটি তদন্তের দাবী তোলেন। তবে প্রাক্তন তদারকি সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার-উল-হক কাকর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার কথায়, তিনি এই নিয়ে কোনো নতুন আইনের প্রণয়ন করেননি। এদিকে শাহবাজ শরীফের সরকার বিষয়টি নিয়ে এক্ষুনি তদন্তে নামতে নারাজ।