বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতের পশ্চিম সীমান্তের ওপার থেকে ক্রমাগত ভেসে আসছে দুঃসংবাদ। এত বছরের পাকিস্তান (Pakistan) সরকারের বিভিন্ন নীতির জন্য আজ চরম দুর্দশার শিকার হচ্ছেন সেখানকার আমজনতা। দু’বেলা খাওয়ার জন্য রুটি নেই, গাড়িতে ভরার জন্য পেট্রোল নেই, বাড়িতে ঠিক মতো বিদ্যুত আসে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতির জন্য দায়ী সেখানকার তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কট (Economic crisis)।
যত দিন যাচ্ছে, পাকিস্তানের দুর্দশার চিত্রটি আরও প্রখর হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি ডুবন্ত দেশের ছবি। অন্যান্য দেশ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েও পায়নি পাকিস্তান। তাতে আরও দুর্দশা বেড়েছে। শাহবাজ শরিফের (Shahbaz Sharif) দেশে মুদ্রাস্ফীতি এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে চড়চড়িয়ে বাড়ছে জিনিসের দাম। বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার একেবারেই তলানিতে থাকায় কিছুই আমদানি করতে পারছে না তারা।
অর্থনৈতিক সঙ্কটের কাছে মাথা নত করেছে পাক সেনাও (Pakistan Army)। তারাও জানিয়েছে, জওয়ানদের দু’বেলা ঠিক মতো খাবার জুটছে না। বিভিন্ন অপারেশন বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। ফলে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ধসে যেতে পারে। এত কিছুর মধ্যেও মন্ত্রী আমলাদের বিলাসবহুল জীবনযাপনে কোনও ঘাটতি দেখা যায়নি। এই কারণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁদের নির্দেশ দিলেন সাধারণ জীবনযাপন করার।
তিনি তাঁর মন্ত্রী ও আমলাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাঁরা যেন বিপুল অর্থের বেতন নেওয়া বন্ধ করেন। পাশাপাশি, বিলাসবহুল জীবনযাপন ছেড়ে সাধারণভাবে জীবনযাপনে মন দেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুমান, এটি করলে ২০ হাজার কোটি পাক রুপি বাঁচানো যাবে। দেশকে ডুবে যাওয়া থেকে বাঁচাতে মরিয়া শাহবাজ শরিফ। তাই বিভিন্ন খাতে খরচ কমিয়ে অর্থনৈতিক সঙ্কট রুখতে চাইছেন তিনি। যদিও প্রধানমন্ত্রীর মতে, এই পদক্ষেপের ফলে বিরাট স্বস্তি হয়তো মিলবে না।
কিন্তু আমজনতার কাছে সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা পাবে। কারণ তাঁরা বুঝবেন যে সরকার তাঁদের পাশে আছে। অবিলম্বে এই পদক্ষেপ কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন শাহবাজ। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, আসন্ন বাজেটে আরও পদক্ষেপ ঘোষণা করা হবে। এই প্রসঙ্গে একটি ক্যাবিনেট বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বৈঠকে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।সেখানে রয়েছে মন্ত্রী আমলাদের বেতন ছাঁটাই।
এছাড়াও নিরাপত্তার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আপাতত রদ করা হবে। এছাড়াও বিলাসবহুল জিনিস আমদানি ও আধিকারিকদের গাড়ির উপর এক বছরেরও বেশি সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা লাগু করা হয়েছে। পাশাপাশি, মন্ত্রী আমলাদের বিদেশ ভ্রমণও কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে ক্যাবিনেটের সদস্যদের পাঁচ তারা হোটেলে থাকার উপরও জারি হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।