দেউলিয়া পাকিস্তান! টাকার অভাবে এবার বিনিময় প্রথায় ব্যবসা চালাবে ইসলামাবাদ

বাংলা হান্ট ডেস্ক : দেউলিয়া হওয়ার পথে পাকিস্তান (Pakistan)। এদিকে সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের শেষেই নির্বাচন হওয়ার কথা পাকিস্তানে। তার আগে শুক্রবারই শেষ বারের মতো পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করলেন সে দেশের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার। ভোটমুখী বাজেটে কোনও চমকের পথে হাঁটল না শাহবাজ় শরিফের সরকার। উল্টে বাজেটের অর্ধেকেরও বেশি টাকা ঋণ মেটানোর জন্যই তুলে রাখা হল। আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে বিনিয়োগকারী এবং বিদেশি ঋণদাতাদের আস্থা অর্জনের জন্যই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতির হার মাত্রাছাড়া। বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারও নিঃশেষিত হতে চলেছে। এই অবস্থায় বৈদেশিক বাণিজ্য চালাতে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে বিনিময় প্রথার মতো পণ্যের বিনিময়ে পণ্য পদ্ধতি এগোতে চাইছে পাকিস্তান। শুক্রবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মোট ১৪.৫ লক্ষ কোটি টাকা বাজেট পেশ করেছেন। তার মধ্যে ৭.৩ লক্ষ কোটি টাকাই ধার মেটানোর কাজে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে।

   

দেশের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ৯৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। বাজেটে চমক বলতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের বেতন ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের অবসরকালীন ভাতাও ১৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার কথা জানানো হয়েছে। ভোটের আগে প্রশাসনের সঙ্গে আধিকারিকদের সন্তুষ্ট করতেই পাকিস্তানের শাসক জোটের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।

Pakistan Crisis3

ঋণ দেওয়ার প্রাথমিক শর্ত হিসাবে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার আগেই পাকিস্তান সরকারকে জানিয়েছিল, নতুন করে কোনও জনমুখী প্রকল্প চালু করতে পারবে না তারা। তবে, সেই কথা মাথায় রেখেই শরিফ সরকার নতুন কোনও চমক দেখানোর পথে হাঁটল না, না কি পরবর্তী নির্বাচনে জয়ের আশা রয়েছে দেখেই সাহসী পদক্ষেপ করল, তা স্পষ্ট নয়।

শুক্রবার অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শরিফ দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কটের দায়ভার চাপিয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘাড়েই। জানিয়েছেন, তাঁর ভুল সিদ্ধান্তেই দেশের এই অবস্থা। পাক অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, পাকিস্তানের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৩.৫ শতাংশ ধরেই বাজেট পেশ করা হয়েছে। যদিও বিশ্বব্যাঙ্ক মনে করছে এই হার ২ শতাংশের বেশি হবে না।

এদিকে, গত এক বছরে সেদেশের মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ৩৭.৯৭ শতাংশ। এশিয়ার কোনও দেশেরই পরিস্থিতি এমন নয়। রাষ্ট্রসংঘের আশঙ্কা আর তিন মাসেই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে ইসলামাবাদে। কিন্তু এহেন অবস্থাতেও প্রতিরক্ষা খাতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ হল পাক বাজেটে। একলাফে খরচ ১৫.৫ শতাংশ বাড়িয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের বাজেটে ১.৮ ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি টাকা তথা ১ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল প্রতিরক্ষা খাতে।

Avatar
Sudipto

সম্পর্কিত খবর