বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারত এবং নিউজিল্যান্ডকে পর পর হারিয়ে একদিকে যেমন পাকিস্তানের অশ্বমেধের ঘোড়া এখন পুরোদমে দৌড়চ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, তেমনি অন্যদিকে প্রথম দিনেই স্কটল্যান্ডকে নাস্তানাবুদ করে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিল আফগানিস্তানও। আফগানিস্তান যে নিজেদের দিনে যেকোনও বড় দলকে সমস্যায় ফেলতে পারে তাও মেনে নিয়েছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞই। শুক্রবার নিজেদের প্রথম বড় ম্যাচে দুবাইতে পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল আফগানিস্তান। গত দিনের মতই টসে জিতে এদিনও প্রথম ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক মোহাম্মদ নাবি। যদিও এই সিদ্ধান্ত খুব একটা কার্যকর হয়নি।
বল হাতে ফের একবার জ্বলে ওঠেন ইমাদ ওয়াসিম, শাহীন শাহ আফ্রিদি, হাসান আলীরা। একদিকে যেমন ভালো ফর্মে থাকা হজরতউল্লাহ জাজাইকে মাত্র ৭ রানেই সাজঘরে ফেরান ওয়াসিম, তেমনি অন্যদিকে ব্যক্তিগত ৮ রানের মাথায় শাহজাদকে শিকার করেন আফ্রিদি। আজ সেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি আফগানিস্তানের মিডিল অর্ডারও। বরং গুরবাজ, আসগর, করিম এবং নাজিবউল্লাহকে পরপর হারিয়ে শুক্রবার রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছিল আফগানিস্তান। মাত্র ৭৬ রানের ৬ উইকেট হারানোর পর অনেকেই ভাবছিলেন ফের হয়তো পাকিস্তানের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখা যাবে আফগান বাহিনীকে। কিন্তু এই পরিস্থিতি থেকে দুরন্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অধিনায়ক মোহাম্মদ নাবি এবং গুলবাদিন। একদিকে যেমন ৩২ বলে ৩৫ রানের গোছানো ইনিংস খেলেন নাবি, তেমনি অন্যদিকে মাত্র ২৫ বলে চারটি চার ও একটি ছয় দিয়ে সাজানো ৩৫ রানের দুরন্ত ক্যামিও উপহার দেন গুলবাদিনও।
কার্যত তাদের এই ৭১ রানের পার্টনারশিপের দৌলতেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে আর একটিও উইকেট না হারিয়ে ১৪৭ রানের লড়াকু স্কোরে পৌঁছায় আফগানিস্তান। পাকিস্তানের হয়ে এদিন মাত্র ২৫ রান দিয়ে সর্বোচ্চ দুটি উইকেট শিকার করেন ইমাদ, একটি করে উইকেট ভাগ করে নেন আফ্রিদি, শাদাব, হ্যারিস এবং হাসান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শুরুতেই বড় ধাক্কা খেয়েছিল পাকিস্তানও। গত দুই ম্যাচের অন্যতম নায়ক রিজওয়ানকে মাত্র ৮ রানেই প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়েছিলেন মুজিব। তবে এই ধাক্কাকে আজ বেশি বড় হয়ে উঠতে দেননি অধিনায়ক বাবর এবং ফখর জামান। নাবির বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে পর্যন্ত বাবরের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ৬৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন তিনি।
Asif Ali to the rescue again!
Pakistan storm to a 5-wicket win as Asif Ali smashes 4 sixes in an over!
AFG 147/6 (20)
PAK 148/5 (19)#PAKvAFG pic.twitter.com/U34AQ2NAmo— PakPassion.net (@PakPassion) October 29, 2021
কিন্তু ৩০ রানে ফখর হারানোর দুঃখ সামলাতে না সামলাতেই শুক্রবার ফের ধাক্কা খায় পাকিস্তান। গত ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও ব্যর্থ হন মোহাম্মদ হাফিজ। মাত্র ১০ রানে তাকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ১০০ উইকেট শিকার করার রেকর্ড গড়েন রশিদ খান। অন্যদিকে লাগাতার এই উইকেট পতন প্রভাব ফেলে বাবরের উপরেও। ৪৭ বলে ৫১ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত রশিদের ঘূর্ণি জালেই পা দেন তিনি। ফলত শুক্রবারও ফের একবার পাকিস্তান নির্ভর হয়ে পড়েছিল গত ম্যাচের দুই নায়ক শোয়েব মালিক এবং আসিফ আলীর উপরেই। তবে গত ম্যাচে বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখালেও আজ তাকে বিপদ বাড়াতে দেননি নবীন-উল-হক। তার বলে মাত্র ১৯ রানেই উইকেটকিপার শাহজাদের হাতে ধরা পড়ে যান শোয়েব। কিন্তু গত ম্যাচের পর এই ম্যাচেও জ্বলে ওঠেন পাকিস্তানের তরুণ প্রতিভা আসিফ আলী। কঠিন পরিস্থিতিতে স্নায়ুর চাপ সামলেও ১৯ তম ওভারে করিমকে চারটি ছয় মেরে ম্যাচ পাকিস্তানে ফের ৫ উইকেটে জয় এনে দেন তিনি। মাত্র ৭ বলে তার ২৫ রানের এই অনবদ্য ইনিংসের সৌজন্যেই আজও বিজয় রথের যাত্রা অব্যাহত থাকল পাকিস্তানের।