বাংলা হান্ট ডেস্ক: মণিপুর (Manipur) সমস্যা নিয়ে তৎপর সারাদেশ। সেখানে ক্রিশ্চান কুকি সংগঠন হিন্দু মেইতেইদের সংঘর্ষ এখন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। পুরোনো বিতর্কের ঘা শুকানোর আগেই সামনে আসে এক মর্মান্তিক ভিডিও যা পুরো দেশকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দেয়। আর এই ঘটনার পুরোদস্তুর ফায়দা তুলতে তৎপর হয়ে উঠেছে পাকিস্তান (Pakistan) এবং তাদের সন্ত্রাসবাদী গ্রুপ। সদ্যই সেই নিয়ে বেশ কিছু তথ্য হাতে পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
ভারতে যে কোনওরকম অস্থির পরিবেশ গড়ে তুলতে সদাই তৈরি থাকে পড়শীদেশ পাকিস্তান। মণিপুরে তারা যোগ্য সঙ্গত পেয়েছে তানভীর আহমেদের PAFF। এক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রটির হাতিয়ায় ISI-এর সঙ্গী জইশ-ই-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বা সহ একাধিক ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেও পড়েছে তারা। গোয়েন্দা দপ্তর সূত্রে খবর, মণিপুরের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পাকিস্তানের তিনটি বড় সন্ত্রাসী সংগঠন তাদের সক্রিয়তা বাড়িয়েছে এবং এজন্য মণিপুরের যুবকদের টার্গেট করছে তারা। সামনে এসেছে Lashkar-e-taiba এবং জয়েশ এর সাথে মণিপুরের PAFF এর কথোপকথন।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরের অবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেকটাই উন্নত। এমতাবস্থায় পাকিস্তান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা এবার বেছে নিয়েছে মণিপুরকে। সুকৌশলে টুলকিটের মাধ্যেমে মণিপুরের পরিবেশ নষ্ট করার পরিকল্পনা করেছে তারা। ভারতীয় গোয়েন্দা বিভাগ গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনবার কথোপকথনের রেকর্ড হাতে পেয়েছে। PAFF-র নেতা এবং সন্ত্রাসী তানভীর আহমেদ হিন্দু এবং খ্রিস্টানদের বিভেদে গড়তে ঘি’তে আগুন ঢালার কাজ করছে। লক্ষ্য একটাই হিন্দু মেইতেই এবং ক্রিশ্চান কুকিদের মধ্যে বিভেদ আরো বাড়িয়ে তোলা। যদিও সরকারের তৎপরতায় ধীরে ধীরে হলেও শান্তি ফিরছে সেখানে। গ্রেফতারও হয়েছে বহু বিচ্ছিন্নতাবাদী।
ষড়যন্ত্রের বিষয় সামনে আসার পর থেকেই নজরদারি বেড়েছে ব্যপকভাবে। তবে গোয়েন্দা দপ্তর আজ নয়, মণিপুরে চলমান বিরোধের বেশ শুরু থেকেই পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি যে বড় কিছু অশান্তি তৈরি করতে চলেছে তার আভাস পায়। যদিও একা পাকিস্তান নয়, বিষয়টিতে প্রচ্ছন্ন মদত আসছে চীনের তরফ থেকেও। আর সেজন্য শুধু মণিপুর অথবা রাজ্যের সীমান্ত নয়, পার্শ্ববর্তী রাজ্যেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তারপরই সামনে এসেছে পুরো বিষয়টি।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বহু আগেই ধারণা করেছিলেন যে, মণিপুরে চলমান সমস্যার পিছনে বিদেশী সংযোগ থাকলেও থাকতে পারে। বিশেষ করে আগামী ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে যে দেশের অন্দরে নতুন সমস্যা এবং বিশৃঙ্খলা তৈরী হবে বিদেশি মদতে সেই বিষয়েও সন্দীহান ছিলেন তারা। উল্লেখ্য যে, মণিপুরে পাকিস্তানের উদ্দেশ্য বেশ ভালোভাবেই বোঝা যাচ্ছে। তবে দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও হাত পা গুটিয়ে বসে নেই। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণে এনেছেন কিছুটা।
উল্লেখ্য, মণিপুরের এই বিবাদ আজকের নয়। ১৮ বছর ধরে চলছে এই সমস্যা। ২০১৮ সালে বিজেপি ক্ষমতায় জিতে আসার পর শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এই রাজ্যটিতে। কিন্তু আদালত মেইতেইদের ST সংরক্ষণ দেওয়ার ঘোষণা করলে ক্রিশ্চান কুকিরা আবারো সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সেই সংঘর্ষই বাড়তে বাড়তে আজকে এই পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। আর এই অশান্তির পুরো ফায়দা ওঠাতে চাইছে পাকিস্তান।