আমির খান (amir khan) অভিনীত লগান (laagan) সিনেমার কাচরা চরিত্রকে মনে আছে? যার ঘুর্নিতে নাজেহাল হয়েছিল ব্রিটিশ ক্রিকেটাররা। সেই চরিত্রের অনুপ্রেরণা ছিলেন পালওয়ঙ্কর বালু (palwankar balu)। ভারতের প্রথম দলিত ক্রিকেটার। ভেদাভেদের শিকার হয়েও যিনি একা হাতেই বাঁচিয়েছিলেন দেশের সম্মান।
সালটা ১৯১১। ব্রিটিশ প্রভুদের হাত ধরে ভারতে শুরু হয়েছে ক্রিকেট কিন্তু তখনও তা ছিল রাজা মহারাজাদের খেলা। রঞ্জিৎ সিং, ভূপিন্দর সিং এর মতো অভিজাত সম্প্রদায়ের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি তখনকার দলে আরো একটি নাম জ্বলজ্বল করে। তা পালওয়ঙ্কর বালু। যদিও ক্রিকেটে বালু কেরিয়ার খুব মসৃণ ছিল না। বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়েও তিনিই হয়ে উঠেছিলেন সেই সময়ের ‘স্টার ক্রিকেটার’।
মুচির ঘরে জন্ম নেওয়া বালু ছিলেন অচ্ছুৎ। পুনের ক্রিকেট ক্লাবে ঘাস ছাঁটাই, পিচ রোলিং, প্র্যাকটিসের নেট টাঙানো এসব করতেন মাত্র ৪ টাকা বেতনে। অচ্ছুৎ হওয়ায় দুরত্ব বজায় রাখতে হত ক্রিকেটারদের থেকে৷ আর সেখান থেকেই উত্থান বালুর।
ব্রিটিশ ক্রিকেটার জন গ্লেনি গ্রেগ প্র্যাকটিস শেষে একাই অনুশীলন চালাতেন।স্বাভাবিকভাবেই সেই সময়ে কেউ তাকে বল করার জন্য এগিয়ে আসত না। জাত-পাত বিভেদ না মানা গ্রেগ, বল করার জন্য ডেকে নিয়েছিলেন অচ্ছুৎ বালুকেই। তখনই তিনি তার মধ্যে ক্রিকেটার হওয়ার গুন আবিস্কার করেন। বালুর বিষাক্ত লেগস্পিনে বেশ কয়েকবার পরাজিত হন এই ব্যাটসম্যান।
তারপরই তিনি বালুকে দলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। যদিও এ নিয়ে অভিজাতদের মধ্যে আপত্তি ছিলই। ক্রিকেটের মাঠ ছাড়া সব জায়গাতেই তিনি ছিলেন অচ্ছুৎ। অন্যদের জন্য দামি আসবাবে কাঁসা ও পিতলের বাসনে খাওয়ার চক থাকলেও তাকে মাঠেই মাটির থালায় খাবার খেতে হত রোদে বসে৷
এহেন বালু ব্রিটেন ট্যুরে সেই ট্যুরে ১১৮টি উইকেট নিয়ে পুরো টুর্নামেন্টের সেরা উইকেট শিকারির স্বীকৃতি ছিনিয়ে এনেছিলেন। হারতে থাকা ভারতীয় দলের হয়ে একাই লড়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ১৮৯৬ সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে জিমখানা দলের জয়েও বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন বালু। একাই নিয়েছিলেন ৫ উইকেট ।