বাংলাহান্ট ডেস্ক : সকাল থেকেই পয়গম্বরের অবমাননার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উত্তপ্ত ছিল পার্ক সার্কাসের সেভেন পয়েন্ট মোড়। সেই গরম পরিস্থিতির মধ্যেই শুক্রবার দুপুরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। পার্ক সার্কাসের বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে গুলিতে নিহত হলেন দুই জন, আহত আরও এক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, শুক্রবার দুপুর প্রায় আড়াইটের সময় আচমকাই আউট পোস্ট থেকে বেরিয়ে আসেন এক পুলিশকর্মী। কাঁধে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল। কড়েয়া থানা এলাকার লোয়ার রেঞ্জ রোড দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে এগোতে থাকেন তিনি। কাঁধের রাইফেল নেমে আসে হাতে, চলতে শুরু করে গুলি। এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়তে ছুড়তে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে থাকেন তিনি। সেই সময় লোয়ার রেঞ্জ রোড ধরে এপিসি রোডের দিকে আসছিল একটি অ্যাপ নির্ভর বাইক। তাঁর গুলি গিয়ে লাগে বাইকের দুই আরোহীর গায়ে। পিছনের আসনে বসেছিলেন এক মহিলা। তাঁর মাথা ফুঁড়ে গুলি বেরিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। বাইক চালকের গায়েও গুলি লাগে। তার পর নিজের রাইফেল থেকে গুলি চালিয়ে দেন নিজের গলার কাছে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই পুলিশকর্মীরও।জানা যাচ্ছে গুলিতে মৃত ওই মহিলার নাম রিমা সিংহ। বছর ২৮-র ওই মহিলা হাওড়ার দাশনগরের ১৩৩ নম্বর ফকির মিস্ত্রি বাগানের বাসিন্দা।
এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। কী পরিচয় ওই পুলিশকর্মীর? কেনই এমন কাণ্ড ঘটনা ঘটালেন তিনি? কলকাতা পুলিশের অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার প্রবীণ ত্রিপাঠি জানান, নিহত পুলিশ কর্মীর নাম চোদুপ লেপচা। তিনি কালিম্পঙের বাসিন্দা। কাজ করতেন কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর পঞ্চম ব্যাটালিয়নে। সপ্তাহখানেক আগে আরও অনেকের সঙ্গে তাঁকেও বেকবাগানের কাছে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনের আউটপোস্টের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে বহাল করা হয়েছিল। তার দুদিন পরেই ঘটিয়ে ফেললেন এমন মর্মান্তিক ঘটনা।
ত্রিপাঠি আরও জানান, ওই পুলিশ কর্মীর মানসিক সমস্যা ছিল। তিনি আর্মস পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। তবে পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখতে হবে বলে জানান তিনি। এই ঘটনার সঙ্গে এদিন সকালের পার্ক সার্কাসের বিক্ষোভের কোনও সম্পর্ক নেই বলে স্পষ্ট করেন প্রবীণ ত্রিপাঠি।