বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পরিবার পরামর্শ কেন্দ্রে স্ত্রীর সাথে বিবাদ মিটিয়ে নিতে আসা স্বামী স্ত্রীকে তিন বার তালাক বলে বিচ্ছেদ করে নেয়। আইনি ভাবে তিন তালাক প্রথা বন্ধ হওয়ার কারণে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেফতার করে।
এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের খন্ডবার গুলনাজ সিদ্দিকির সাথে ঘটেছে। তিনি ৮ বছর আগে ঝাঁসির আজাহারকে বিয়ে করেছিলেন। প্রথমে সবই ঠিকঠাক চলছিল, দুটি সন্তানও হয় দম্পতির। এরপর থেকে দুজনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। লকডাউনের প্রথমের দিকে আজাহার আচমকা স্ত্রী আর সন্তানদের ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যায়। গুলনাজ নিজের আর নিজের সন্তানদের পেট ভরার জন্য ভিক্ষা করার অবস্থায় পৌঁছায়। এরপরেও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মন গলেনি তাঁদের এই দুর্দশা দেখে। সে বাধ্য হয়ে নিজের বাপের বাড়ি চলে যায়।
গুলনাজ জানান, আমার স্বামী বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য অত্যাচার করত। অনেকবার আমার বাবা তাকে টাকাও দেয়, কিন্তু তাতেও তাঁর মন ভরেনা। গুলনাজ জানায়, আজাহার সবসময় পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখত। আর এরপর লকডাউনে আচমকাই বাড়িঘর ছেড়ে চলে যায়। আমাদের সেই সময় না খেতে পেয়ে মরার সময় হয়ে এসেছিল। তখন আমি ভিক্ষা করে নিজের আর সন্তানদের পেট ভরাই। আমরা যখন আজাহারকে এখানে সেসব বোঝানর জন্য ডাকি, তখন সে আমাকে তিন তালাক দিয়ে দেয়।
গুলনাজ আর আজাহারের দুটি সন্তান আছে। সাত বছর আগে একটি কন্যা সন্তান হয়েছিল, আর চার বছর আগে একটি পুত্র সন্তান। আজাহারের এই হটকারিতার কারণে এখন সন্তানদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। গুলনাজ নিজের পরিবারকে ভাঙার থেকে বাঁচাতে সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়েছে। গুলনাজ মুসলিম মহিলা বিবাহ অধিকার আইন ২০১৯ এর কারণে বেশ আশাবাদী ছিল, কিন্তু আজাহার এসব আইন মানেই না। আজাহার তালাক দেওয়ার সময় সবার সামনে বলে, আমাকে খোদার কাছে মুখ দেখাতে হবে, তাই এরকম সিদ্ধান্ত নিলাম।
সিটি কোতওয়ালি থানার ইনচার্জ বিএল মন্ডলাই বলেন, মহিলা পরিবার পরামর্শ কেন্দ্রে নিজের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, এরপর আজাহারকে সেখানে বিবাদ মিটিয়ে নেওয়ার জন্য ডাকা হয়। পরামর্শ কেন্দ্রে সে তিন তালাক বলে নিজের স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে দেয়। মুসলিম মহিলা বিবাহ অধিকার আইন ২০১৯ অনুযায়ী, আজাহারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।