প্রতি বছরের মতো চরম উন্মাদনা মাঝে শুরু হয়েছে এবারের আইপিএল প্রতিযোগিতা। অতীতে আটটি দল অংশগ্রহণ করলেও এবারে দশটি টিম নিয়ে শুরু হয়েছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ। নতুন দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে লখনউ এবং গুজরাট তাদের পারফরমেন্সের মাধ্যমে সকলকে চমকে দিয়েছে। তবে শুরুটা ভালো করলেও বর্তমানে পরপর পাঁচটি ম্যাচ হেরে ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছে গতবারের ফাইনালিস্ট এবং আইপিএলের অন্যতম সফল দল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
বর্তমানে শাহরুখ খানের কলকাতা দল পয়েন্ট তালিকায় নিচের দিকে অবস্থান করলেও অংকের হিসেবে এখনো প্লে-অফের যাওয়ার সুযোগ রয়েছে তাদের। চলুন অংকের হিসেবটি একবার দেখে নেওয়া যাক।
আইপিএলে এখনো পর্যন্ত 9 টি ম্যাচ খেলে মাত্র 3 টি তে জয়লাভ করেছে কলকাতা। সর্বশেষ ম্যাচটি দিল্লির কাছে পরাজিত হওয়ার ফলে পরপর 5 ম্যাচ হারের রেকর্ড করেছে তারা। তবে এর মধ্যেও আশার কথা হলো এই যে, এখনো পুরোপুরি ভাবে ছিটকে যায়নি কেকেআর।
সব ম্যাচে জয়লাভ করতে হবে
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাকি পাঁচ ম্যাচের যদি 5 টা তেই জয়লাভ করে, তবে তাদের সর্বমোট পয়েন্ট দাঁড়াবে 16 এবং সে ক্ষেত্রে অন্য কোন দলের ওপর নির্ভর না করেই সরাসরি প্লে-অফে যাওয়ার সুযোগ থাকবে কলকাতার।
অন্তত 4 টি ম্যাচ জয়লাভ
বাকি পাঁচ ম্যাচের মধ্যে একটি যদি হারে কলকাতা, তবে সেক্ষেত্রে প্লে-অফের রাস্তা মুশকিল হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে চারটি ম্যাচে জয়লাভ-এর ফলে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে 14। ফলে তখন লিগের অন্যান্য দলের ওপর নির্ভর করে থাকতে হবে। গত বেশ কয়েক বছরে দেখা গেছে 14 পয়েন্ট নিয়েও বহু টিম প্লে-অফে উঠতে সক্ষম হয়েছে। সে ক্ষেত্রে অবশ্য প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়ায় নেট রানরেট।
পরপর দুটি ম্যাচ হারলে
এবার যদি ধরা যায়, পাঁচটির মধ্যে অন্তত দুটি ম্যাচে হারল কেকেআর। সে ক্ষেত্রে গ্রুপ লিগ থেকেই বিদায় নিতে হবে তাদের! কারণ সেক্ষেত্রে তাদের পয়েন্ট দাঁড়াবে 12 এবং এই পয়েন্ট নিয়ে বর্তমানে দশ দলের মধ্যে সেরা চারে জায়গা করে নেওয়া কার্যত অসম্ভব।
প্রসঙ্গত, এবারের আইপিএলের পূর্বে শ্রেয়স আইয়ার থেকে শুরু করে রাহানে, ফিঞ্চ, প্যাট কামিন্স সহ একাধিক তারকাদের দলে নিয়ে চমক দেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। ফলে অনেকেই আশা করেছিল যে, কলকাতার পক্ষে প্লে অফে যাওয়া কোন ব্যাপারই নয়। শুরুটা অবশ্য খুবই ভালো করে তারা। প্রথম চারটির মধ্যে তিনটি ম্যাচে জিতে একসময় অপ্রতিরোধ্য দেখায় শ্রেয়স আইয়ারদের। কিন্তু এর পরেই নামে বিপর্যয়!
একের পর এক ম্যাচ হারের ফলে দলে একাধিক পরিবর্তন ঘটাতে থাকে টিম ম্যানেজমেন্ট। বর্তমানে দলের ওপেনিং জুটি থেকে শুরু করে মিডল অর্ডার এবং বোলিং লাইন আপ চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাহানেকে প্রথম দিকের কয়েকটি ম্যাচে সুযোগ দিয়েই বসিয়ে দেওয়া হয়। এরপর নারিন, ফিঞ্চ এবং বিলিংসের মতো প্লেয়ারদের ওপেনিংয়ে সুযোগ দিলেও কোন পরিকল্পনাই সফল হয়নি। এছাড়াও মিডল অর্ডারে নিতীশ রানা, ভেঙ্কটেশ আইয়ার এবং শ্রেয়সরাও ক্রমাগত ব্যর্থ হয়ে চলেছেন। কলকাতা দলের বোলিংয়েরও হাল তথৈবচ! প্রতিটি ম্যাচের বদলে ফেলা হচ্ছে তালিকা। কামিন্স হোক কিংবা শিভম মাভি, সেরা ফর্মের ধারে কাছে নেই কেউই; এক্ষেত্রে লিগের পরবর্তী পাঁচ ম্যাচে কিভাবে নিজেদের প্ল্যানিং করে কলকাতা, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।